জাকের আলি অনিক © সংগৃহীত
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথমবারের মতো অংশ নিতে যাচ্ছে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। নবাগত ফ্র্যাঞ্চাইজি হলেও নিলামের পর থেকে একের পর এক চমক দেখিয়ে আসছে দলটি। যদিও নিলামের আগেই হাসান মাহমুদ ও সৌম্য সরকারকে দলে নেয় তারা। বিদেশিদের মধ্যে কুশল মেন্ডিস, জনসন চার্লস ও মোহাম্মদ নবীর মতো নামও রয়েছে।
এদিকে বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তে নিলামে পরপর দুই ডাকে জাকের আলী অনিক ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে স্কোয়াডে ভেড়ায় তারা। এ ছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করা আরও বেশকিছু নামী মুখও দলটিতে আছেন। স্বাভাবিকভাবেই তারকাসমৃদ্ধ এমন দলের নেতৃত্ব কার হাতে যাবে, এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে চারদিকে।
এই আলোচনায় শুরু থেকেই এগিয়ে ছিলেন জাকের। সম্প্রতি আফগানিস্তান সিরিজে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেন, সিরিজও জিতিয়েছেন। ফলে অভিজ্ঞতা ও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, অধিনায়কের আর্মব্যান্ডটা জাকেরের কাঁধেই উঠবে।
কিন্তু বাস্তবতা যেন ভিন্ন গল্প বলছে। নোয়াখালীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বজলুর রহমান রতন সরাসরি জানিয়েছেন, অধিনায়ক হিসেবে জাকের তার পছন্দ নন। তার এই মন্তব্যের পর বিষয়টি আর রহস্য থাকল না; নিশ্চিত হয়ে গেল এই তারকাখচিত দলের নেতৃত্ব পাচ্ছেন না জাকের।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'যেহেতু আমাদের কোচ আছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। আমাদেরও একটি পরিকল্পনা আছে। কোচ হিসেবে তিনিও আমাদের মতামত জানাবেন। সৌম্য সরকার আছে, তবে জাকের আলী অনিককে অধিনায়ক হিসেবে আমার পছন্দ না, এটাই বাস্তবতা। জাকের আলী অনিকের চেয়ে নবি-কুশল মেন্ডিসকে অধিনায়ক হিসেবে নেওয়ার চেষ্টা থাকবে ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে।'
অন্যদিকে দলটির প্রধান কোচ সুজন আগেই পরিষ্কার করে জানিয়েছিলেন, অধিনায়ক হিসেবে তার প্রথম পছন্দ সৌম্য। স্কোয়াডে শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞ ক্রিকেটার কুশল মেন্ডিস থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে নেতৃত্বে চান না, সেটির ব্যাখ্যাও খোলাসা করেন তিনি। সুজনের যুক্তি, দলের নেতৃত্ব স্থানীয় কারো হাতেই থাকা উচিত। বিদেশি ক্রিকেটাররা সাধারণত পুরো মৌসুমে দলটির সঙ্গে থাকতে পারেন না।
সুজন বলেছিলেন, 'আমি লোকাল ছেলের প্রতি ইন্টারেস্টেড। কারণ আমার মনে হয় লোকাল ছেলেরা আমার জন্য ভালো হবে। কারণ কুশল দেখবেন চার ম্যাচ পর খেলে চলে যাবে, তখন আরেকটা নতুন ক্যাপ্টেন দিতে হবে। এটা আমি চাই না। আমি চাই একটা লম্বা ক্যাপ্টেন্সি করলে ইজি হবে টিমের জন্য।'
এদিকে সিলেট টাইটান্স ও রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে আগামী ২৬ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে এবারের আসর। একইদিন সন্ধ্যা ৭টায় মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম রয়্যালস ও নোয়াখালী এক্সপ্রেস। পরদিন দুপুর ১টায় মাঠে নামবে ঢাকা ক্যাপিটালস ও রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। একইদিনে সন্ধ্যা ৬টায় সিলেট টাইটান্স মুখোমুখি হবে নোয়াখালী এক্সপ্রেসের।
ঘরোয়া এই টুর্নামেন্ট সিলেটে শুরু হয়ে চট্টগ্রাম ঘুরে শেষ পর্বে ঢাকায় ফিরবে বিপিএল। সিলেট ও চট্টগ্রামে ১২টি করে এবং ঢাকায় এলিমিনেটর, কোয়ালিফায়ার ও ফাইনালসহ ১০টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এলিমিনেটর ও প্রথম কোয়ালিফায়ার ১৯ জানুয়ারি, দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ২১ জানুয়ারি এবং ফাইনাল ২৩ জানুয়ারি। সব নকআউট ম্যাচের জন্য রিজার্ভ ডে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
একনজরে নোয়াখালী এক্সপ্রেস স্কোয়াড: হাসান মাহমুদ, সৌম্য সরকার, কুশল মেন্ডিস, জনসন চার্লস, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলী অনিক, হাবিবুর রহমান সোহান, মুশফিক হাসান, শাহাদাত হোসেন দীপু, রেজাউর রহমান রাজা, নাজমুল ইসলাম অপু, আবু হাশিম, মেহেদী হাসান রানা, সৈকত আলী, সাব্বির হোসেন, রহমতউল্লাহ আলী, ইহসানউল্লাহ খান, হায়দার আলী, মাজ সাদাকাত, জহির খান, মোহাম্মদ নবী, ইবরার আহমেদ।