‘র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করতে পারে অমিত’

অমিত কুমার বিশ্বাস ও জাবির লোগো
অমিত কুমার বিশ্বাস ও জাবির লোগো  © ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ রফিক-জব্বার হলের ছাদ থেকে পড়ে নিহত অমিত কুমার বিশ্বাস ‘র‌্যাগিংয়ের শিকার বা হলের কোনো পূর্ব ঘটনার জের ধরে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার’ হয়ে থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করছেন অমিতের বাবা অজয় কুমার বিশ্বাস।

বুধবার (১১ মে) অমিতের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ নিয়ে ঢাকা থেকে যশোরের উদ্দেশে রওনা দেয়ার আগে গণমাধ্যমের কাছে এমন সন্দেহের কথা জানান তিনি।

অজয় কুমার বিশ্বাস বলেন, অমিত ছোটবেলা থেকে শান্ত। কারও সাথে কোনো ঝগড়া বা মারামারি করতে শুনিনি। অবসরে ভালো ছবি আঁকতো। এ বছরই অর্নাস শেষ হওয়ার কথা ছিল। করোনার কারণে বছরখানেক দেরি হয়ে গেল। অমিতের আত্মহত্যার করার তো কোন কারণ দেখছি না। এবার ঈদে বাড়িতে গিয়েও খুব হাঁসি-খুশিতে ছিল। তার মধ্যে কোনো কখনো চরম হতাশা বা বিষন্নতায় ভুগতে দেখেনি। কি কারণে এটা হলো বুঝতে পারছি না।

কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, পরিবারের একমাত্র ছেলে হিসাবে খুব আদরে ছিল অমিত। আমি চাকুরিতে থাকি বলে; যা দরকার মায়ের কাছ থেকে চেয়ে নিত সে। এবার ঈদের ছুটিতে বাসায় এসে আমাকে বলল- বাবা এবার তো আমার পড়াশুনা শেষ হয়ে যাচ্ছে। বিসিএস প্রস্তুতি নেব। হলে গিয়েই কিছু বই কিনবো।

আরও পড়ুন: চিরকুট লিখে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে জাবির শহীদ রফিক-জব্বার হলের পাঁচ তলার ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হলে অমিত কুমার বিশ্বাসকে তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বিকাল সাড়ে ৫টায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার ইন্টারনাল ব্লিডিং ও মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয় বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক।

 রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার রুমমেটরা এসে বালিশের নিচে এ সুইসাইড নোট পান। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার রুম পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে নোটের বিষয়টি নিশ্চিত করেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সোহেল আহমেদ।

সুইসাইড নোটে লিখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার মস্তিষ্কই আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী। আমি নিজেই নিজের শত্রু হয়ে পড়েছি অজান্তেই। নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে আমি ক্লান্ত। আর না। এবার মুক্তি চাই। প্রিয় মা-বাবা, ছোট বোন সবাই পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।’  এছাড়াও তার পড়ার টেবিলে আরও কয়েকটি সুইসাইড বিষয়ক মন্তব্য লেখা পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, প্রাথমিকভাবে নোটের লেখার সঙ্গে তার আগে খাতার লেখার মিল রয়েছে। এছাড়াও তার রুমের পড়ার টেবিলে সুইসাইড বিষয়ক আরও লেখা রয়েছে। আমরা আপাতত রুম বন্ধ করে রেখেছি। পুলিশ এসে বাকিটুকু দেখবে।


সর্বশেষ সংবাদ