ক্যান্সারের কাছে হেরে গেলেন রাবি অধ্যাপক ফারুক হোসাইন

 রাবি অধ্যাপক ফারুক হোসাইন
রাবি অধ্যাপক ফারুক হোসাইন  © ফাইল ফোটো

ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসাইন আর নেই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ সোমবার ভোর ৫ টা ৪৫ মিনিটে মুম্বাইয়ে টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৯ বছর। তার এই অকাল মৃত্যুতে পুরো বিভাগ জুড়ে চলছে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) ড.ফারুক হোসাইনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কে.এম. রবিউল করিম।

আরও পড়ুন: অনলাইন ক্লাসের উপস্থিতির নম্বর নিয়ে বিপাকে জবি শিক্ষার্থীরা

তিনি বলেন, ফারুক হোসেন স্যার ২০১৯ সাল থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ২৬ জুলাই ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর গত তিনচার মাস পূর্বে চেকআপ করতে গিয়ে দেখেন তার ঔষধগুলো ঠিকমত কাজ করছে না।

তারপর ওনাকে হাসাপাতালে রেখে কেমো দেয়া শুরু হয়। মাঝখানে কিছুটা শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছিলো। তবে গত কয়েকদিন আগে স্বাস্থের অবনতি হলে আবার হসপিটালাইজড করা হয়। সেখানে তাকে অক্সিজেন সার্পোটে রাখা হয়েছিলো। আজকে স্যারের স্ত্রী কাছ থেকে জানতে পারলাম ভোর পৌনে পাঁচটায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন। তবে কখন দেশে আনা হবে বা কোথায় জানাযা হবে এ বিষয়ে কিছু জানতে পারিনি।

আরও পড়ুন: হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা, মামলা করব: রাব্বানী

তার এই অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিভাগে শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো: রবিউল ইসলাম জানান, অধ্যাপক ফারুক ছিলেন শিক্ষার্থীবান্ধব এবং বিভাগের সবচেয়ে জনপ্রিয় শিক্ষক। অত্যন্ত মেধাবী ও একজন ভালো মানের গবেষকও ছিলেন তিনি। তার মতো একজন শিক্ষক বর্তমান সময়ে পাওয়া খুব কঠিন। তিনি শিক্ষার্থীদের মনের ভাষা খুব সহজেই বুঝতে পারতেন।

যার ফলে বিভাগের প্রতিটি শিক্ষার্থীর অন্তরে তিনি আলাদা একটা জায়গায় করে নিয়েছিলেন। তার অনুপস্থিতি সমাজকর্ম পরিবারের জন্য চরম হতাশাজনক ও অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এই অকাল প্রস্থানে শুধু সমাজকর্মের নয় পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন: আগুন থেকে যেভাবে প্রাণে বাঁচলেন নার্সিং ছাত্রী মুক্তা

মরহুম ফারুক হোসাইন ১৯৭২ সালে যশোর সদর উপজেলার দোগাছিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে তিনি যথাক্রমে বিএসএস (সম্মান) ও এমএসএস পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিসহ উত্তীর্ণ হন। ২০০২ সালে তিনি রাবি সমাজকর্ম বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন ও ২০১৭ সালে প্রফেসর পদে উন্নীত হন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী এবং এক কন্যা রেখে গেছেন।

অধ্যাপক ফারুক হোসাইনের মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি সমাজকর্ম বিষয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় মরহুমের অবদান গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

রাবি উপাচার্য বলেন, তাঁর মৃত্যুতে একজন কৃতী সমাজকর্মবীদ হারালো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। এছাড়া মরহুমের আত্মার মাগফিরাত ও শোকসন্তপ্ত পরিবারে প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন উপাচার্য।

শোক প্রকাশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলামও। তিনি জানান, অধ্যাপক ফারুক দীর্ঘদিন থেকেই ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তবে তার এই বিদায় আমাদের খুবই মর্মাহত করে। তাকে মুম্বাই থেকে দেশে আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা করবে।


সর্বশেষ সংবাদ