বিভিন্ন ধর্মের নেতাদের সঙ্গে জাবি শিক্ষার্থীদের মতবিনিময়

বিভিন্ন ধর্মের নেতাদের সাথে জাবি শিক্ষার্থীদের মতবিনিময়
বিভিন্ন ধর্মের নেতাদের সাথে জাবি শিক্ষার্থীদের মতবিনিময়  © সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সাথে মত বিনিময় করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের সেমিনার কক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, পূজা উদযাপন পরিষদ, ঢাকা জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সাভার মডেল মসজিদের খতিবসহ বিভিন্ন ধর্মের ব্যক্তিবর্গ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হন।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক কামরুল আহসান বলেন, ‘নিজের স্ববিরোধী কোনো কিছু করা উচিত হবে না। যেটা আমরা বলছি সেই কাজটা সঠিকভাবে আমাদের করতে হবে। আমি নিজে বলে যদি সেই কাজ না করি তবে আমার আর পূর্বের স্বৈরাচারের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সবার প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে আপনারা নিজেদের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখবেন। একে অন্যের বিপদে এগিয়ে আসবেন। ছাত্র-জনতার এই বিজয় যেন কখনো বেহাত না হয়'।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী মামুন বলেন, ‘'১৬ তারিখ রাতে পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর আমি সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হই। চিকিৎসা গ্রহণ শেষে কিছুটা সুস্থ হলে হাসপাতালে আমার সাথে সাভারের বিভিন্ন ধর্ম পেশার মানুষ দেখা করতে আসে। অনেকে আমাকে চেনেও না, জানেও না তবুও দেখতে আসেন। আমাদের সাভারের সকলের মধ্যে যে ভালোবাসার সম্প্রীতি আছে তা আমাদের বজায় রাখতে হবে। জাতি-ধর্মের পরিচয়ের বাইরে গিয়ে আমাদের সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, ১৯৭১ পরবর্তী সময়ে  আমাদের মাঝের যে জাতিগত সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছিল। তা আমরা ২০২৪ এ এসে পুনরায় প্রতিস্থাপন করতে পেরেছি। তবে একটি পক্ষ এখনো সেই নোংরা খেলায় মেতে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা চাই এই সম্প্রীতি বজায় থাকুক'।

এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, 'প্রাচীন বাংলায় সকল মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সম্প্রীতি ছিল একসাথে বসবাস করতো। ব্রিটিশ আমলে এই সম্প্রীতি নষ্ট করে বিভক্ত নীতি প্রয়োগ করা হয় যা পরবর্তীতে চলতেই থাকে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে ব্যবহার করে তখন থেকেই একের পর এক হিন্দুসহ আদিবাসীদের জায়গা দখল করে নিচ্ছিল সুবিধাবাদী মহল'।

তিনি আরও বলেন, ‘'মহান মুক্তিযুদ্ধের পরে আমরা এই সাম্প্রদায়িক বিভেদ ভুলে সম্প্রীতির আশা করেছিলাম। কিন্তু একটি পক্ষ তা ভেঙে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সকল সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণকে অস্বীকার করে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করছিল। তারা পুনরায় বিভক্ত নীতি চালু করেছিল। ২০২৪ এর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করেছি এই ‘বিভক্ত নীতিকে’ মূল থেকে তুলে ফেলে অসাম্প্রদায়িক সমাজ তৈরি করার। সকল ধর্মীয় চেতনা উপরে আমাদের একমাত্র পরিচয় হবে আমরা মানুষ'।


সর্বশেষ সংবাদ