তদন্ত প্রতিবেদনকে দায়সারা দাবি করে অনাস্থা কুবি শিক্ষক সমিতির

  © ফাইল ফটো

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ৭ দফা দাবিতে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন দায়সারাভাবে দেওয়া হয়েছে অভিযোগ তুলে ঐ প্রতিবেদনে অনাস্থা জানিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। দাবিসমূহের যৌক্তিকতা নিরূপণ না করে দুই কার্যদিবসে প্রতিবেদন দাখিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছে এবং এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট আরো বেশি ঘনীভূত হবে বলে মন্তব্য করেছে শিক্ষক সমিতি।

শনিবার (২৫ শে) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ দাবি করেন। 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিয়ম ও প্রথা অনুযায়ী যেকোনো তদন্ত কমিটি বা সভার কার্যক্রম শুরুর আগে কমিটি সংশ্লিষ্ট সকল সদস্য সহযোগে একটি নিয়মতান্ত্রিক সভায় মিলিত হয়ে উক্ত কমিটির টার্মস অফ রেফারেন্স (Terms of reference), কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ প্রভৃতি বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা ন্যূনতম অনুসরণ করা হয়নি। কমিটির সদস্য আবদুন নূর মুহম্মদ আল-ফিরোজ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বদলি হওয়ার কারণে ২০ মে সভায় উপস্থিত ছিলেন না। দ্বিতীয় দিনে তাঁর স্থলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অন্য একজন অংশগ্রহণ করলেও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনের উপর পরিপূর্ণভাবে তাঁর পর্যবেক্ষণ ও মতামত প্রদানের সুযোগও সীমিত ছিল। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আহ্বায়ক কমিটির সচিবের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটির কোনোরূপ সভা ছাড়া মাত্র তিনজনকে সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। যা অনিয়মতান্ত্রিক, অগণতান্ত্রিক, প্রকৃত সত্য উদ্‌ঘাটনে অপর্যাপ্ত, সর্বোপরি বেআইনি যার দায়ভার তিনি এড়াতে পারেন না। ওই তিন সদস্য হলেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসাম, কর্মকর্তা জাকির হোসেন, প্রক্টর জনাব কাজী ওমর সিদ্দিকী। তবে কীসের ভিত্তিতে ওই তিনজনকে ডাকা হয়েছে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। 

"শিক্ষক সমিতির প্রতিটি দাবি ও অনিয়মের সাথে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈন জড়িত থাকলেও কমিটি তাঁর কোনো সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেননি, যা পুরো তদন্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। নিয়োগ, পদোন্নতি ও স্থায়ীকরণে যে সকল শিক্ষক ক্ষতিগ্রস্ত, বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন তাদের সাক্ষাৎকারও গ্রহণ করা হয়নি। কিংবা তাদের আবেদন তথ্য কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে দাবিসমূহের যৌক্তিকতা নিরূপণে কমিটি কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ফলে দাবিসমূহ বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হবে এবং এতে করে প্রকৃত ঘটনা আড়াল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট আরো বেশি ঘনীভূত হবে।" বিজ্ঞপ্তিতে যুক্ত করেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ( আহ্বায়ক ও উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়), সদস্য সচিব কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভুঁইয়া, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুন নূর মুহম্মদ আল ফিরোজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। 

এদিকে গত ২৮ এপ্রিলের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত কমিটির সদস্য প্রফেসর মো. হেলাল উদ্দিন নিজামী, ডিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সিন্ডিকেট সদস্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়-এর ব্যাপারে শিক্ষক সমিতি আপত্তি উত্থাপন করেছে।


সর্বশেষ সংবাদ