বিষয় পেয়েও একটুর জন্য চবিতে ভর্তি হতে পারলেন না আরিফ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতেই সন্ধ্যা ৭টা বেজে যায়। ওইদিনই ছিল ভর্তির শেষদিন। ক্যাম্পাসের কাউকেই চিনি না। রাতটা স্টেশনের ট্রেনে শুয়ে কেটেছে। পরেরদিন শুক্রবার হওয়ায় ফিরে যাই। ক্যাম্পাসে পরিচিত কেউ না থাকায় খুবই অসহায় লাগছিল। ভর্তির টাকাও ছিল না। ১ হাজার টাকা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন নিয়ে ঘর থেকে বের হই।’ কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থী। 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ৭৫৪তম হয়েছিলেন। নাম মো. আরিফুল ইসলাম। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি মেধাক্রমে অনুসারে পেয়েছেন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত দর্শন বিভাগ। গত বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) শেষ হয় ভর্তি পরীক্ষার প্রথম মেধাতালিকার ভর্তির সময়। তবে ভর্তি হতে পারেননি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরের এই শিক্ষার্থী।

আরিফ বলেন, আমি থাকি গ্রামে। স্মার্টফোন না থাকায় ভর্তির আপডেট পেতে কষ্ট হতো। আমার বন্ধুদের মাধ্যমে খোঁজখবর নিতাম। বন্ধুদের সঙ্গে এসে চবিতে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আমার বন্ধুরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে গেছে। চবিতে ভর্তির প্রথম মেরিটের বিষয়টি জানতে আমার একটু দেরি হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার ভর্তির সময় শেষ, জানতে পারি বুধবার। ভর্তির কাগজপত্র গুছিয়ে আসতে আসতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা হয়ে যায়। 

আরিফ আরো বলেন, আমার বাবা একজন কৃষক। মায়ের স্বপ্ন আমি পড়াশোনা করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য আমি অনেক পরিশ্রম করে টাকা রোজগারের চেষ্টা করেছি। কৃষি কাজ করে পরিবারের ভরণপোষণে সহযোগিতা করেছি। 

ভারাক্রান্ত স্বরে আরিফ বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরে বের হই ভর্তি হওয়ার জন্য। কিন্তু এদিন ঢাকায় রাজনৈতিক সমাবেশ থাকায় গাড়ি কয়েক ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছায়। এদিকে আমার ভর্তির সময় শেষ হয়ে গেল। আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই। আমি অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করেছি। ভর্তির সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় আমি ডিন, ভর্তি কমিটির প্রধান এবং উপাচার্য বরাবর দরখাস্তও দিয়েছি। 

স্মার্টফোন না থাকায় ভর্তির আপডেট পেতে কষ্ট হতো। আমার বন্ধুদের মাধ্যমে খোঁজখবর নিতাম। বন্ধুদের সঙ্গে এসে চবিতে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আমার বন্ধুরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে গেছে। চবিতে ভর্তির প্রথম মেরিটের বিষয়টি জানতে আমার একটু দেরি হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার ভর্তির সময় শেষ, জানতে পারি বুধবার। ভর্তির কাগজপত্র গুছিয়ে আসতে আসতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা হয়ে যায়। 

ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ হারানোর বিষয়টি জেনে চবির 'উদ্দীপ্ত বাংলাদেশ' নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এগিয়ে আসে। আরিফকে আর্থিক ও মানসিক সহযোগিতা দিয়ে সংগঠনটির সভাপতি হাসিবুর রহমান বলেন, সাব্বির নামের এক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে আরিফের বিষয়টি জানতে পারি। একজন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে এটা আসলে দুঃখজনক। সে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৪.৫৪ এবং এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। মানবিক দৃষ্টিকোণ বিবেচনায় হলেও ছেলেটির ভর্তি হওয়া দরকার। 

ভর্তির নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় ভর্তি নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক। তিনি বলেন, আমরা চাই না একজন শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হোক। কিন্তু আমাদের ভর্তি প্রক্রিয়ার সবকিছুই নির্ধারিত করা আছে। অবৈধভাবে কিছু করা তো সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, সে ভর্তির সময়সীমা অনুযায়ী ১৩ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে আসেনি। দ্বিতীয় মেধাক্রমের কার্যক্রম তো শুরু হয়ে গেছে। এখন এটা কীভাবে হবে, সেটা কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত। আমার কিছু জানা নেই। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence