ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

যৌন হয়রানিতে জড়িয়ে স্থায়ী বহিষ্কার টিএসসিভিত্তিক সংগঠনের নেতা

কে. এম. ইতমাম ইসলাম
কে. এম. ইতমাম ইসলাম  © টিডিসি ফটো

যৌন হয়রানিতে জড়িয়ে সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘টিএসসিভিত্তিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের (ডিইউএফএস) এক নেতা। শুক্রবার (৩১ মার্চ) রাতে সংগঠনটির সহ তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক ফারহান সাকিব আলভীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংগঠন থেকে আজীবন বহিষ্কার হওয়া ওই নেতার নাম কে. এম. ইতমাম ইসলাম। তিনি ডিইউএফএস-এর সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে ছিলেন। তবে বিষয়টি সর্ম্পকে কিছুই জানেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে আজ শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ বিষয়ে এখনও কোন অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ আসলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ডিইউএফএস বলছে, কে. এম. ইতমাম ইসলামের বিরুদ্ধে আনীত যৌন নিপীড়নের অভিযোগ 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ সুরক্ষা কমিটি'-এর নিকট প্রমাণিত হওয়ায় কার্যকরী কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে তাকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অভিযুক্তকে সংগঠনের সকল সাংগঠনিক কাঠামো থেকে আজীবন বহিষ্কার এবং সব সাংগঠনিক কার্যক্রমে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

এর আগে চলতি বছরের ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ সুরক্ষা কমিটি বরাবর সংসদের একজন নারী সদস্য (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী) কে. এম. ইতমাম ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ সুরক্ষা কমিটি তদন্তটি পরিচালনা করে। কমিটির নিকট থাকা তথ্য-প্রমাণের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগের প্রামাণ্য ভিত্তি আছে বলে কমিটির সকল সদস্য একমত পোষণ করেন।

“তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ সুরক্ষা নীতিমালা- এর ৩(খ) ও ৩(গ) ধারা অনুযায়ী কে. এম ইতমাম ইসলামকে যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং অভিযুক্তকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ সুরক্ষা নীতিমালার ২(ঘ) ধারা অনুযায়ী অভিযুক্তকে সংগঠনের সকল সাংগঠনিক কাঠামো থেকে আজীবন বহিষ্কার এবং সব সাংগঠনিক কার্যক্রমে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।”

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ কোনো প্রকার যৌন হয়রানিকে সমর্থন করে না, প্রশ্রয় দেয় না এবং যেকোনো প্রকার যৌন হয়রানি, যৌন নিপীড়ন এবং অসদাচরণের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সর্বদা সচেষ্ট। এই সংগঠন বরাবরই তার কর্মক্ষেত্রে ও সকল উদ্যোগে এই দৃষ্টিভঙ্গি কঠোরভাবে মেনে চলে। সংগঠনের সকলের জন্য সুস্থ এবং সমমর্যাদার একটি সংবেদনশীল পরিবেশ নিশ্চিত করা, সকল উদ্যোগ ও কর্মকাণ্ডে জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করা সংগঠনেরই দায়িত্ব। এক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ বরাবরই সংগঠনের সকল সদস্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সকল প্রকার যৌন ও অযৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ আগামীতেও কোনো প্রকার যৌন হয়রানিকে সমর্থন, প্রশ্রয় কিংবা রাখ-ঢাক করার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি শিয়ান শাহরিয়ার আলমগীর বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সবকিছু দেওয়া আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ সবসময় যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে। সেই সাথে আমার আহবান থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সংগঠন নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখে এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সেগুলো বিচারের আওতায় এনে যেন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কে. এম. ইতমাম ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। সংগঠন থেকে যেই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটা দেওয়া হয়েছে, সেখানেই সবকিছু আছে।


সর্বশেষ সংবাদ