নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক নদী বিষয়ক সম্মেলন শুরু

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন  © জনসংযোগ

নর্থ সাউথ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ) ‘ট্রান্স-বাউন্ডারী রিভারস অফ সাউথ এশিয়া: ফস্টারিং রিজিওনাল কোলাবোরেসন ফর এনভায়রনমেন্টাল সাস্টেয়েনবলিটি’ শীর্ষক দুদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি এন্ড গভর্নমেন্ট (এসআইপিজি) এবং ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগ এবং বাংলাদেশের জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন (এনআরসিসি) উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলন দক্ষিণ এশিয়ার নদী ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোর সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করছে। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (স্যানপা) এই সম্মেলনের সহযোগী অংশীদার।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর আখলাক হক, প্রেসিডেন্ট, সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (স্যানপা), ড. মেহেবুব সাহানা, লেভারহুলম ইসিআর ফেলো এবং প্রভাষক, ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্য, রাষ্ট্রদূত মাশফী বিন্তে শামস, রেক্টর, ফরেন সার্ভিস একাডেমি, বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন (এনআরসিসি), বাংলাদেশ এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম।

এই সম্মেলনে বাংলাদেশ, নেপাল, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক এবং কেনিয়ার গবেষকদের মোট ৪০টি প্রবন্ধ উপস্থাপন। প্রায় ৬০ জন অংশগ্রহণকারী রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩০ জনই আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারী। এদের বেশির ভাগই ভারত থেকে অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনের নির্বাচিত লেখা হতে সিআরসি প্রেস, রাউটলেজ-টেইলর এবং ফ্রান্সিস গ্রুপের কাছ থেকে একটি সম্পাদিত খণ্ড প্রকাশিত হবে।

প্রফেসর আখলাক হক দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এই ভাগ করে নেওয়া জল সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি আরও বলেন যে এই সম্মেলন শুধু আলোচনার স্থান নয়, ভবিষ্যতের জন্য একটি আশার আলো হিসেবে কাজ করবে।

ড. মেহেবুব সাহানা সম্মেলনের থিম ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটি জ্ঞানগর্ভ ভূমিকা দেন। তিনি বলেন, গ্লোবাল সাউথ এবং দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলের নদী এবং নদী শাসন সংক্রান্ত গবেষণার গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ এই অঞ্চলে আন্তর্জাতিক নদীর সংখ্যা বেশি। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে এবং আন্তর্জাতিক নদী সম্পর্কে আমাদের নিজস্ব মনোভাব তৈরি করতে সহায়তা করবে।

ড. মোহাম্মদ আবুল হোসেন যৌথ প্রচেষ্টার গুরুত্ব দিয়ে বলেন যে স্টেকহোল্ডাররা জলভিত্তিক সমস্যা সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত গবেষক এবং সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রে লেখার জন্য উৎসাহিত করেন যাতে আন্তর্জাতিক জলসীমা বিষয়ক ইস্যুগুলি বিশ্বের দর্শকের কাছে তুলে ধরা হয়।

রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর একটি যৌথ ইতিহাস রয়েছে এবং তাদের ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক মূল অনুরূপ। আন্তর্জাতিক নদী বিষয়ক ইস্যুগুলো জাতীয় সমস্যা সমাধানে এবং যৌথ সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি পানির ইস্যু নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক দক্ষতা প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের আশা ব্যক্ত করেন।

জনাব সারওয়ার মাহমুদ অনুরূপ মতামত প্রকাশ করে অত্যাবশ্যকীয় জল সম্পদ রক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পক্ষে সমর্থন করেন। এনআরসিসি এই লক্ষে কৌশলগত উপদেশ, গবেষণা এবং সম্প্রদায়ের সাথে কাজ অব্যাহত রাখছে এবং তিনি ভবিষ্যতে এসআইপিজির সাথে আরও সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি আরও বলেন, নদীগুলো কেবল ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নয়, বরং আমাদের অস্তিত্বের অংশ।

অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম উজানের নদীর দেশগুলোকে ভাটির দেশগুলোর প্রতি বিবেচনাশীল হওয়ার গুরুত্ব উল্লেখ করেন, কারণ তাদেরও জল সম্পদের অধিকার রয়েছে। তার মতে, প্রকৃতির ন্যায়বিচার ব্যবস্থায় প্রত্যেকেই সমান। তিনি আরও বলেন, এনএসইউ সর্বদা বাংলাদেশ এবং বিশ্বের মুখ্য সমস্যাগুলোর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে।

সম্মেলনটি দক্ষিণ এশিয়া এবং তার বাইরের বিশ্লেষক, নীতি নির্ধারক, গবেষক এবং অনুশীলনকারীদের একত্রিত করেছে, যা পরিবেশগত টেকসই এর লক্ষ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে অর্থপূর্ণ সংলাপ এবং উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ