তোর কোন পায়ে গুলি করব, বল?

ছাত্রদল নেতাকে রাবি ছাত্রলীগ সম্পাদক

রাবি ছাত্রলীগ সম্পাদক গালিব ও ছাত্রদল নেতা নাফিউল
রাবি ছাত্রলীগ সম্পাদক গালিব ও ছাত্রদল নেতা নাফিউল   © সংগৃহীত

নিজ কক্ষে আটকে রেখে ছাত্রদলের একনেতা ও তার বন্ধুকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই ছাত্রদল নেতাকে পিস্তল দেখিয়ে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়- ‘তোর কোন পায়ে গুলি করব, বল?’। সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতার নাম নাফিউল ইসলাম জীবন। তিনি শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক। তার সঙ্গে ছিলেন বন্ধু ইউনুস খান। তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা বলেন, রাতে আমি ও আমার বন্ধু মিলে তাপসী রাবেয়া হলের সামনে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের তিন নেতা আমাদের পেছনে এসে দাঁড়ায়। তাদের দেখে আমরা ক্যাম্পাস থেকে বাইক নিয়ে চলে আসছিলাম। আসার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমপাড়া আবাসিক এলাকায় তারা আমাদের পথ রোধ করে তাদের বাইকে আমাকে তুলে নেয়।

তিনি বলেন, এরপর আমাকে মাদার বখ্শ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব ওই কক্ষে আসেন। তিনি আমাকে দলীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এক পর্যায়ে আমাকে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও মাথার ওপর কিল-ঘুসি মারেন। এরপর একটা পিস্তল বের করে গুলি লোড-আনলোড করতে করতে আমাকে বলেন, ‘তোর কোন পায়ে গুলি করব, বল?’ এমন করতে করতে একবার শুট করেন। তবে গুলি তখন আনলোড করা ছিল। এছাড়া তারা জোরপূর্বক আমার মোবাইল চেক করেন। পরে রাত ১টার দিকে তারা আমাকে সহকারী প্রক্টরদের হাতে তুলে দেন।

এ ঘটনায় রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, একা পেয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছাত্রদল কর্মীকে নির্যাতন করে সন্ত্রাসীদের সংগঠন ছাত্রলীগ কাপুরুষের পরিচয় দিয়েছে। সেই সঙ্গে ছাত্রলীগ প্রকাশ্য আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত আহত ও নির্যাতন করছে। রাবি প্রশাসন ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আমি প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করছি।

অভিযোগের বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ওই ছেলেকে কোনো ধরনের মারধর, হুমকি কিংবা মানসিক নির্যাতন করা হয়নি। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এর আগে ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা লাগিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করে। আমরা সন্দেহজনকভাবে তাকে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। পরে তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হস্তান্তর করি।

পিস্তল দেখিয়ে পায়ে গুলি করার হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। কারণ অস্ত্রের রাজনীতি ছাত্রদল করে, ছাত্রলীগ করে না। ছাত্রলীগের হাতে কলম থাকবে, অস্ত্র নয়।

রাবি প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ফোন পেয়ে আমি ওই হলে দুজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠাই। তারা সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে বিনোদপুরে পৌঁছে দেন। এ ঘটনায় মারধর কিংবা নির্যাতনের কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। মারধরের প্রমাণ সাপেক্ষে অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখব।


সর্বশেষ সংবাদ