প্রশাসনের বিরুদ্ধে চবি শিক্ষক সমিতি, দায় নেবেন না চারনেতা
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১০:২৬ PM , আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৩০ PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রশাসনের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে ২৬ দফা দাবি তুলে ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। তবে সমিতির এমন অবস্থানের বিরোধিতা করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কার্যনির্বাহী পর্ষদের চারজন সদস্য।
আজ রোববার (২৬ নভেম্বর) সমিতির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের কোনো দায়ভার এই চারজন শিক্ষক নেবেন না বলে শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. রকিবা নবী ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরিদুল আলমের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিবৃতিতে ৪ সদস্য বলেন, শিক্ষক সমিতির সাম্প্রতিক সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড যেমন- সংবাদ সম্মেলন, অবস্থান ধর্মঘট, নিয়মিত ভাবে বিশাল আকারের বিবৃতি প্রদান, বিভিন্ন শিক্ষক কে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বিবৃতি প্রদান (যা শিক্ষক সমিতির ৫০ বছরের ইতিহাসের পরিপন্থী), বিভিন্ন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার (প্ল্যানিং কমিটির মিটিং এ অনুপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও উপস্থিত ছিলেন বলে অসত্য বিবৃতি) সহ অসংখ্য কর্মকাণ্ড শিক্ষক সমিতির ৩০ ভাগ সদস্যকে না জানিয়ে, কোন রকম অবহিত না করে, কোন বিস্তারিত সভায় আলোচনা না করে শীর্ষ নেতাদের স্বাক্ষর নিয়ে করা হয়েছে।
এর দায়ভার কোনোভাবেই অন্তত চারজন শিক্ষক নেবেন না। আমরা এসব মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করছি, শিক্ষকদের বিব্রত করা কোনোভাবেই শিক্ষক সমিতির কর্মপরিধির মধ্যে পড়ে না। এবং আমাদের সকল সম্মানিত সহকর্মীর সাথে আমরা ছিলাম, আছি, থাকবো। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন দুর্নীতি কিংবা ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশ এর বিরোধী অথবা গণতন্ত্রের ও মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার বিরোধী কোন কর্মকাণ্ড হলে অবশ্যই আমরা তার প্রতিবাদ করবো।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সমিতির ৩০ ভাগ সদস্যকে কোন কিছু না জানিয়ে, উপেক্ষা করে কোনোরকম প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত আমাদের হতবাক ও হতাশ করেছে। শিক্ষকদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে সব কিছু জানার ও মতামত দেয়ার শতভাগ অধিকার আমাদের আছে। সমিতির ৩০ ভাগ সদস্য কে অবহিত না করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার, অপমানিত করা ও বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টার আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সমিতির অন্য দুজন হলেন যুগ্ম -সম্পাদক অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান ও অধ্যাপক ড. দানেশ মিয়া।
বিবৃতির বিষয়ে জানতে চাইলে সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরিদুল আলম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সমিতির কার্যনির্বাহী পর্ষদে প্রশাসনের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতির আন্দোলন কর্মসূচি সম্পর্কে কোনো ধরনের আলোচনা হয়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে তারা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। আজকের কর্মসূচি সম্পর্কেও জানানো হয়নি, কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। এমনকি হোয়াটস্যাপ গ্রুপে বা টেলিফোন করেও জানানো হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমরা চারজন সদস্য এই সমিতিরই অংশ। কিন্তু আমাদের চারজনকে জানানো হয়নি। এমনকি বাকি ৭ জন এই বিষয়ে জানতো কি না আমরা জানি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকরা যাতে বিভ্রান্ত না হন সেজন্য তারা বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান শিক্ষক সমিতির এই সদস্য।
৪ সদস্যের এমন বিবৃতি নিয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তাঁদের দেওয়া এই বিবৃতির বক্তব্য পরিষ্কার নয় এবং সম্পূর্ণ অসত্য। কার্যকরী পর্ষদের যে ৪ সদস্য এ বিবৃতি দিয়েছেন তাঁদেরসহ সমিতির সবাইকে জানানো হয়েছে সার্বিক কর্মসূচির বিষয়ে। তাঁরা যদি না আসে তাহলে আমরা তো তাঁদের বাড়ি গিয়ে জানাতে পারবো না। সংখ্যাগরিষ্ঠ উপস্থিতির সম্মতিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এখন তাঁরা বিবৃতি দিচ্ছেন। তাঁরা সাধারণ সভায় উপস্থিত থেকে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা কেন করলেন না? কেন নোট অব ডিসেন্ট দিলেন না? তাঁরা সবই জানেন এবং বুঝেন। সব জেনে তাঁরা ছেলেখেলা কেন করছেন তা তাঁরাই ভালো জানেন।