সেরা ১০ তরুণ বিজ্ঞানীর তালিকায় বাংলাদেশি অনন্যা

তনিমা তাসনিম অনন্যা
তনিমা তাসনিম অনন্যা  © ফাইল ছবি

বিশ্বের সেরা ১০ তরুণ বিজ্ঞানীর একজন হলেন বাংলাদেশি তরুণী তনিমা তাসনিম অনন্যা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সায়েন্স নিউজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান গত ৩০ সেপ্টেম্বর ‘এসএন টেন: সায়েন্টিস্ট টু ওয়াচ’ নামের প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীদের এই তালিকা প্রকাশ করেছে।

সায়েন্স নিউজ টানা ছয় বছর ধরে তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে উদীয়মান ও ক্যারিয়ারের মাঝামাঝি থাকা সম্ভাবনাময় তরুণ বিজ্ঞানীদের তালিকা প্রকাশ করছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সায়েন্স নিউজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত তিনি সবচেয়ে ভারি কৃষ্ণগহব্বর আঁকতে সক্ষম হয়েছেন এবং দেখিয়েছেন, মহাবিশ্বে কোথায় কীভাবে কৃষ্ণগহব্বর বেড়ে উঠছে এবং কীভাবে তারা তাদের পরিবেশকে প্রভাবিত করে। তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে এটি সম্পন্ন করেছেন।

tonima

তনিমার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন পাঁচ বছর বয়সে যখন ঢাকায় ছিলেন, তখন তার গৃহবধূ মা তাকে মঙ্গল গ্রহে পাথফাইন্ডার মহাকাশযানের অবতরণের কথা বলেছিলেন। তনিমার মা গৃহবধূ হলেও বিজ্ঞানের বিষয়ে তার কৌতূহল ছিল এবং তনিমার কৌতূহলকে তিনি উৎসাহিত করেছিলেন।

তনিমা বলেন, বাংলাদেশে এই বিষয়ে পড়ার সুযোগ না থাকায় আমি পেনসিলভেনিয়ার ব্রায়ান মাওর কলেজে পড়তে স্নাতক পর্যায়েই যুক্তরাষ্ট্রে চলে এসেছিলাম।

অনন্যা জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকে আগ্রহের কারণে মহাকাশবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে বাংলাদেশে এ বিষয়ে তেমন পড়াশোনার সুযোগ না থাকায় তিনি বিদেশে যেতে আগ্রহের কথা পরিবারকে জানান। প্রথমে কোনোভাবেই বিদেশে পড়তে যেতে দিতে রাজি ছিল না তার পরিবার। তবে অনন্যার আগ্রহের কাছে হার মেনেছে তার বাবা-মা।

২০০৬ সালে অনন্যার বয়স যখন ১৫ ছুঁই ছুঁই, তখনি ইন্টারন্যাশনাল জেনারেল সার্টিফিকেট অব সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন কোর্স শুরু করেন তিনি। লক্ষ্য ছিল ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন করে বিদেশে পাড়ি জমানোর। সেই মিশনেও বাজিমাত করে অনন্যা। সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়ে প্রথম হন তিনি। সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়েও। ফলে সহজেই স্কলারশিপে বিদেশে পড়তে যাওয়ার সুযোগ মেলে। এরপরই ভিজিটিং স্টুডেন্ট হিসেবে যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে যান তিনি।

২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার ব্রায়ান মাওর কলেজ থেকে স্নাতক করেন অনন্যা। পরে তিনি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে পিএইচডি করেন। তনিমা বর্তমানে ডার্টমাউথ কলেজের একটি পোস্টডক্টোরালের গবেষণা সহযোগী।

তার জন্ম বাংলাদেশের নরসিংদী জেলায়। বাবার চাকরির সুবাদে তার শৈশব কেটেছে রাজধানী ঢাকায়। গৃহিণী মায়ের অধিকাংশ সময় কাটত রান্নাঘরে। পাঁচ বছর বয়সী তনিমাকে গল্পের ছলে মঙ্গলগ্রহে মহাকাশযান অবতরণ সম্পর্কে বলেছিলেন তার মা। মায়ের মুখে শোনা গল্পে মহাকাশ নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠে অনন্যা। জ্যোতির্বিদ্যায় পড়াশোনার চিন্তা ভর করে তার মাথায়।


সর্বশেষ সংবাদ