চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠা বৈষম্যবিরোধী নেতা নাহিদের পক্ষে ‘জমির মালিকের’ সংবাদ সম্মেলন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ হাসান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ হাসান  © সংগৃহীত

রংপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ হাসান খন্দকারের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জমির মালিক আজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তি। তিনি দাবি করেছেন, ইকোপার্ক নির্মাণ ও অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ে সেই জমির প্রকৃত মালিক তিনি এবং জমি দখলের ঘটনায় সহযোগিতা চাওয়ায় ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে ও উল্লেখ করেন তিনি।

আজ রবিবার (২ মার্চ) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে রংপুর নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন আজহারুল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যের পর তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নেরও জবাব দেন।  

এর আগে, শনিবার (১ মার্চ) সকালে একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগরের মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকারের সঙ্গে এক ব্যক্তির টাকা নিয়ে দর-কষাকষির দৃশ্য দেখা যায়। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে এবং সংগঠন থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাহিদ।  

সংবাদ সম্মেলনে আজহারুল ইসলাম বলেন, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার পূর্ব খলেয়া মৌজায় তাঁর ৪ একর ৫৯ শতাংশ জমি আছে। ২০১৯ সালে তাঁর ভাই আতিকুল ইসলাম ও মঞ্জুরুল ইসলাম গং জাল রিটের মাধ্যমে জমিটি দখল করেন। পরে আদালতে মামলা হলে সিআইডির তদন্তে জালিয়াতির প্রমাণ মেলে। কিন্তু রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে তাঁর ভাইয়েরা এখনো অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন।  

আজহারুল দাবি করেন, জমি উদ্ধারের জন্য তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সহায়তা চান। তাঁরা সত্যতা যাচাই করতে ঘটনাস্থলে গেলে আতিকুল ইসলাম তাঁদের ঘুষ দিতে চান। ছাত্রনেতারা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে চলে আসেন। পরবর্তীতে গোপনে ধারণ করা কথোপকথন সম্পাদনা করে ফেসবুকে চাঁদাবাজির ভিডিও হিসেবে প্রচার করা হয়।  

অন্যদিকে, আজহারুলের ছোট ভাই আতিকুল ইসলাম দাবি করেন, ‘নাহিদ হাসান খন্দকার সেখানে চাঁদা আদায়ের জন্য গিয়েছিলেন। এ নিয়ে আমি পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি, শিগগিরই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগরের কয়েকজন নেতা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভিডিওটি এক সপ্তাহ আগের। রংপুর নগরের হাজিরহাট এলাকায় একটি ইকোপার্ক নির্মাণ ও অবৈধ বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।  

ইকোপার্কের পরিচালক বেলাল হোসেন বলেন, ‘নাহিদ আমার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। তিনি জেলা প্রশাসক, পুলিশের ভয় দেখান। আমরাই ভিডিওটি ধারণ করে পুলিশ সুপারের কাছে পাঠাই, তবে ফেসবুকে দেইনি।’  

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নাহিদ হাসান খন্দকার বলেন, ‘আমি অবৈধ বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, কিন্তু এক টাকাও নিইনি। তাঁদের অভিযোগ সাজানো, এটা যুবলীগের একটি অংশের ষড়যন্ত্র।’  

এদিকে, সংগঠন থেকে নাহিদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগরের মুখ্য সংগঠক আলী মিলনের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, তিন দিনের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা ব্যাখ্যা করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ