পরিবার ছাড়া যুক্তরাজ্যে প্রথম ঈদ, বড্ড মন খারাপ আইনের ছাত্রী ফারিয়ার

ফারিয়া বিনতে হাই
ফারিয়া বিনতে হাই  © টিডিসি ফটো

উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিবছরই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। ইউনেস্কো প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন ৫২ হাজার ৭৯৯ জন শিক্ষার্থী। এসব বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বিদেশের মাটিতেই কাটাচ্ছেন মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ।

রমজান মাসব্যাপী রোজা রেখে এবারও ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন পরিবারবর্গ ও আত্মীয়স্বজন ছাড়া। তেমন একজন যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ফারিয়া বিনতে হাই।

ফারিয়া যুক্তরাজ্যের সেন্ট্রাল ল্যাঙ্কাশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করছেন। তিনি ফেনী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে পাঁড়ি জমান। দেশটিতে আজ ‍বুধবার উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। পরিবারকে ছেড়ে বিদেশের বাড়িতে ফারিয়ার এটি প্রথম ঈদ।

পরিবার ছাড়া দেশের বাইরে নিজের ঈদের অনুভূতি জানিয়ে বলেন, দেশের বাইরে পরিবার ছাড়া এটাই প্রথম ঈদ। সত্যি বলতে জীবনের প্রথম একা ঈদ। পুরোটা রমজান মাস একা কাটিয়ে দিলাম কাজ করে, কোনদিন একা ইফতার করে তো কোনদিন কাজের ফাঁকে বা বাসে বসে। অবশ্য সবদিন আবার আবার একা ইফতার করতে হয়নি। ফ্রেন্ডরা সঙ্গ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আজ আমাদের এখানে ঈদ। সবাই ছুটিতে রয়েছেন, ভাগ্যক্রমে ভার্সিটিও অফ। তবে কাজ তো আছেই। সত্যি বলতে চাইলেই কাজ থেকে ছুটি নেওয়া যেত। সবাই ছুটি নিলেও আমি নিইনি। আসলে সবারই আত্মীয়-স্বজন আছে উৎযাপন করার মতো, আমার নেই। একা বাসা, সঙ্গে মন খারাপ হবে ভেবে শিফট নিয়ে নিলাম। বাড়ির সবার কষ্ট হবে ভেবে আর একাকিত্বের কথা জানাইনি, বলেছি ‘ভালো আছি’।

বিদেশের মাটিতে বড্ড মন খারাপ ফারিয়ার। তিনি বলেন, এখানে যাদের পরিবার আছে তাদের ঈদ হয়, আমার জন্যও ঈদ। তবে পরিবার ছাড়া ঈদ হয়? ঈদ হলেও কেমন হয় তা আমার জানা নেই। পুরো রমজান মাসে কেবল একদিন আজান শুনেছি, সবদিন ঘড়ি দেখেই ইফতার করেছি।

প্রিয় মাতৃভূমিকে নিয়ে ফারিয়া বলেন, আজ ইদ। প্রত্যেকবার যেই সময়টায় বাবা নামাজে যাবেন বলে দৌঁড়াদৌড়ি করতাম, আজ সেই সময়টায় কাজে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করতছি। প্রায়ই ভাবছি কেমন এক কঠিন জগতে চলে এলাম! চারদিকে নীরব-নিস্তব্ধ, কোন আওয়াজ নেই। সবকিছু সুন্দর সাজানো-গোছানোই বটে। তবে সত্যি বলতে আমার শৈশবের শহর ফেনীকে টেক্কা দেয়ার সাধ্যি নেই।

মন খারপ থাকলেও সেটা প্রকাশ করতে চান না ফারিয়া। তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা সবসময়ই আমার প্রতি সদয় ছিলেন। আমার প্রিয় মানুষ এবং বন্ধুরা আমার অনেক খোঁজ নিয়েছেন। আমি একা আছি বুঝতে দেয়নি। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।


সর্বশেষ সংবাদ