বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে দেশে শিক্ষকতা করতে চান ইস্ট ওয়েস্টের সুমনা

ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণপদকের জন্য মনোনয়ন পাওয়া সুমনা ইয়াছমিন
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণপদকের জন্য মনোনয়ন পাওয়া সুমনা ইয়াছমিন  © টিডিসি ফটো

দেশের অন্যতম স্বনামধন্য বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইডব্লিইউ) ২২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২রা মার্চ (বৃহস্পতিবার)। এবারের সমাবর্তনে ডিগ্রি প্রদান করা হবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্যাঁয়ের ২৩৫১ জন শিক্ষার্থীকে। এরমধ্যে সমাবর্তনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের তিনজন শিক্ষার্থী তাদের সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে পাচ্ছেন ‘ভিসি অ্যাওয়ার্ড বা স্বর্ণপদক’।

সমাবর্তনে স্বর্ণপদকের মনোনয়ন প্রাপ্ত তিনজন শিক্ষার্থীর একজন বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের স্নাতক সম্পন্নকারী সুমনা ইয়াছমিন। স্নাতকে সাফল্যের সাথে সিজিপিএ ৩.৯৯ নিয়ে পাঠ্যক্রম সম্পন্নের স্বীকৃতি স্বরূপ এবারের সমাবর্তনে ‘ভিসি অ্যাওয়ার্ড বা স্বর্ণপদক’ পাচ্ছেন তিনি। 

শিক্ষাজীবনে অসাধারণ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখা এ শিক্ষার্থীর ছোটবেলা থেকেই শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। সে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতেই কঠোর পরিশ্রম আর দৃঢ় লক্ষ্য নিয়েই সামনে এগোতে থাকেন সুমনা। তিনি সহপাঠী বা অন্যদের পড়া বা কোন কিছু বুঝিয়ে দেয়া থেকে তিনি উপলব্ধি করেন পড়ানোর বিষয়টিতে তিনি আনন্দ পান এবং তা তার মধ্য থেকে ইতিবাচকভাবেই আসে। আর তাতেই তিনি তৃপ্তি খুঁজে পান কৃতী এই শিক্ষার্থী।

সুমনার পৈতিক নিবাস চাঁদপুর হলেও তার জন্ম ও বেড়ে উঠা রাজধানীতেই। পরিবারে তিন ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট সুমনা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক দুটোই সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করেন রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে। 

পছন্দের পাবলিক প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্তোষজনক অবস্থান না পাওয়ার পর ভালো ফলাফল করার প্রত্যয় করেন তিনি। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য সুমনা বেঁছে নেন বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে। প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তুলনায় কম টিউশন ফি এবং ভালো ফলাফলের ভিত্তিতে স্কলারশিপ বা বৃত্তিসহ নানা সুযোগ-সুবিধার কথা চিন্তা করেই ইস্ট ওয়েস্টে ভর্তি হন সুমনা। তিনি কম্পিউটার সায়েন্সের বর্তমান এবং নিকট ভবিষ্যতের চাহিদার কথা বিবেচনা এবং ইস্ট ওয়েস্টের কম্পিউটার সায়েন্সের খ্যাতির বিষয়টি মাথায় রেখেই কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নেন। 

উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে শুরুতে ভালো ফলাফল এবং স্কলারশিপ অর্জনের অদম্য ইচ্ছে থেকেই শেষ পর্যন্ত তিনি তার ভালো ফলাফলের ধারা অব্যাহত রাখেন এবং এ সাফল্য অর্জন করেন। ভালো ফলাফল অর্জনে তাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে ক্লাসে শীর্ষ অবস্থান এবং স্কলারশিপ সুবিধা ফলে পরিবার, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সহপাঠীদের ভালোবাসা।

বর্তমানে এই শিক্ষার্থী শিক্ষকতা করছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস এন্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পূর্ণকালীন লেকচারার হিসেবে। একইসাথে তিনি কর্মরত আছেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে এডজান্ট লেকচারার হিসেবে। অদম্য প্রতিভাবান ভবিষ্যতে কম্পিউটার সায়েন্সের উপর বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরে শিক্ষকতা এবং গবেষণায় নিয়োজিত থাকতে চান। 

অনুজদের প্রতি তার পরামর্শ, ভালো ফলাফল করার পাশাপাশি নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করার দিকে মনোনিবেশ করার বিষয়ে। সুমনার বিশ্বাস পরিবর্তনের বিশ্বের কর্মক্ষেত্রে ভালো ফলাফলের পাশাপাশি ভালো কারিগরি দক্ষতা বা টেকনিক্যাল স্কিলগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও তার পরামর্শ পড়াশোনার পাশাপাশি গবেষণার প্রতি ও মনোনিবেশ করা। ‘Finish the race… What you have started you must finish it.’ সবসময় এমন বিশ্বাস লালন করা সুমনার এ প্রত্যয় সাহস যোগাবে অনুজদের-বিশ্বাস কৃতি এই শিক্ষার্থীর। 


সর্বশেষ সংবাদ