পবিত্র শবে কদর আজ, জেনে নিন ফজিলত ও আমল
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৩ AM , আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৮:১২ AM

পবিত্র শবে কদরের রাত আজ। এই রাত মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত মহিমান্বিত একটি রাত। রাতটিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটান। রমজানের শেষ ১০ দিনের যে কোন এক বেজোড় রাতই পবিত্র শবে কদরের রাত। তবে বেশীরভাগ আলেম-ওলামার মতে ২৬ রমজানের দিন শেষে ২৭ রমজানের রাতই হচ্ছে মহিমান্বিত সেই রাত।
এই রাতেই নাজিল হয়েছিল মুসলমানদের ইহকাল-পরকালের দিক নির্দেশনামূলক পবিত্র কুরআন শরিফ। কদরের এই রাতে পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয় এবং এই রাতকে কেন্দ্র করে কোরআনে ‘আল-কদর’ নামে একটি সুরাও আছে।
‘শবে কদর’ কথাটি ফারসি। শব মানে রাত বা রজনী আর কদর মানে সম্মান, মর্যাদা, গুণ, সম্ভাবনা, ভাগ্য ইত্যাদি। শবে কদর অর্থ হলো মর্যাদার রাত বা ভাগ্যরজনী। শবে কদরের আরবি হলো লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত।
এদিন এশা এবং তারাবিহ্ নামাজ আদায়ের পর নফল ইবাদত, কুরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকারের মধ্য দিয়ে ফজিলতের এ রাত পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। শবে কদরের তাৎপর্য তুলে ধরে রাতভর মসজিদে মসজিদে বিশেষ বয়ান চলবে। পাপ থেকে মুক্তি আর সকলের মঙ্গল কামনায় করা হবে বিশেষ মোনাজাত।
কদর রাতের ফজিলত
মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল হওয়ার কারণে অন্যসব মাসের চেয়ে রমজান মাস বেশি ফজিলত ও বরকতময় হয়েছে। আর রমজানের রাতগুলোর মধ্যে কোরআন নাযিলের রাত লাইলাতুল ক্বদর সবচেয়ে তাৎপর্যমণ্ডিত একটি রাত।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি একে নাযিল করেছি কদরের রাতে। তুমি কি জান ক্বদরের রাত কি? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। (সূরা: কদর, আয়াত: ১-৩)।
এ আয়াতের ব্যাখায় মুফাসসিরকুল শিরোমণি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘এ রাতের ইবাদত অন্য হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে উত্তম’। (তানবিরুল মিকবাস মিন তাফসিরে ইবনে আব্বাসঃ ৬৫৪ পৃষ্ঠা)।
তাবেয়ি মুজাহিদ (র.) বলেন, এর ভাবার্থ হলো, ‘এ রাতের ইবাদত, তেলাওয়াত, দরুদ কিয়াম ও অন্যান্য আমল হাজার মাস ইবাদতের চেয়েও উত্তম।’
মুফাসসিররা এমনই ব্যাখ্যা করেছেন। আর এটিই সঠিক ব্যাখ্যা। (ইবনে কাসির: ১৮ খণ্ড, ২২৩ পৃষ্ঠা)।
শবে কদরের আমল
সুতরাং লাইলাতুল কদর পেলে এ আমল ও দোয়া রাত অতিবাহিত করা জরুরি। তা হলো-
১. নফল নামাজ পড়া।
২. মসজিদে ঢুকেই ২ রাকাত (দুখুলিল মাসজিদ) নামাজ পড়া।
৩. দুই দুই রাকাত করে (মাগরিবের পর ৬ রাকাত) আউওয়াবিনের নামাজ পড়া।
৪. রাতে তারাবির নামাজ পড়া।
৫. শেষ রাতে সাহরির আগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া।
৬. সম্ভব হলে সালাতুত তাসবিহ পড়া।
৬. সম্ভব হলে তাওবার নামাজ পড়া।
৭. সম্ভব হলে সালাতুল হাজাত পড়া।
৮. সম্ভব হলে সালাতুশ শোকর ও অন্যান্য নফল নামাজ বেশি বেশি পড়া।
৯. কুরআন তেলাওয়াত করা। সুরা কদর, সুরা দুখান, সুরা মুয্যাম্মিল, সুরা মুদ্দাসির, সুরা ইয়াসিন, সুরা ত্বহা, সুরা আর-রাহমান, সুরা ওয়াকিয়া, সুরা মুলক, সুরা কুরাইশ এবং ৪ কুল পড়া।
১০. দরূদ শরিফ পড়া।
১১. তাওবাহ-ইসতেগফার পড়া। সাইয়্যেদুল ইসতেগফার পড়া।
১১. জিকির-আজকার করা।
১২. কুরআন-সুন্নায় বর্ণিত দোয়াপড়া।
১৩. পরিবার পরিজন, বাবা-মা ও মৃতদের জন্য দোয়া করা, কবর জেয়ারত করা।
১৪. বেশি বেশি দান-সদকা করা।
পবিত্র লাইলাতুল কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। শবে কদর উপলক্ষে আগামীকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) সরকারি ছুটি থাকবে।