শ্রেণিকক্ষ সংকটে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

শ্রেণিকক্ষে সংকটে রয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কয়েকটি বিভাগ। এর মধ্যে তিন বিভাগের নেই কোনো স্থায়ী ক্লাসরুম এবং সাতটির কোনোটিতেই নেই সেমিনার লাইব্রেরি বা কম্পিউটার ল্যাব। এর ফলে ব্যাহত হচ্ছে বিভাগগুলোর নিয়মিত শিক্ষাকার্যক্রম। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপও নেই‌।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ প্রতিষ্ঠার, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ও সমাজ কল্যাণ বিভাগ, চারুকলা বিভাগ এবং কমিউনিকেশন এন্ড মিডিয়া জার্নালিজম এবং শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে কমেনি শ্রেণিকক্ষ সংকট।

এসব সমস্যার সমাধান ধীরগতিতে হয়। নতুন ভবনগুলোর কাজ সম্পন্ন হলে আর শ্রেণি কক্ষ ও আবাসিক সংকট তেমন থাকবে না। -অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম, উপাচার্য

এর মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ছয় ব্যাচের জন্য দুটি, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ও সমাজ কল্যাণ বিভাগে পাঁচ ব্যাচের জন্য একটি ক্লাসরুম বরাদ্দ রয়েছে। এ ছাড়া চারুকলা, কমিউনিকেশন এন্ড মিডিয়া জার্নালিজম এবং শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের জন্য স্থায়ী কোনো ক্লাসরুম বরাদ্দ হয়নি।

জানা গেছে, চারুকলা বিভাগের ক্লাস টিএসসিসি এবং রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের অস্থায়ী দুটি কক্ষে, কমিউনিকেশন এন্ড মিডিয়া জার্নালিজম বিভাগ আইআইইআর ভবনের অস্থায়ী একটি কক্ষে এবং শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ক্লাস গণিত বিভাগ ও জিমনেসিয়ামের অস্থায়ী একটি কক্ষে নেয়া হচ্ছে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে রুটিন অনুসারে সময় মতো ক্লাস না হওয়ায় সিলেবাস শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে। এ ছাড়া এক ব্যাচের ক্লাস শেষ হতে না হতেই অন্য ব্যাচের শিক্ষার্থীরা একই ক্লাসরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকে। এতে মনোসংযোগে যেমন ব্যাঘাত ঘটে ক্লাস রুমে অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। তেমনি অস্বস্তিবোধ করেন দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীরাও।

আমাদের ক্লাসরুম আছে একটা। কোন পরীক্ষা থাকলে অন্যান্য ব্যাচের ক্লাস নেয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পরে। এটা নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সকলেই সমস্যায় পড়ছি। -শ্যাম সুন্দর সরকার, সভাপতি, সমাজ কল্যাণ বিভাগ

শিক্ষকরা জানান, একটি-দুটি শ্রেণিকক্ষে ৫-৬টি ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা চালানো খুবই কষ্টসাধ্য। এ কারণে নিয়মিত ক্লাস এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বিঘ্ন হচ্ছে। এতে পিছিয়ে পড়ছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী বলেন, একটি ক্লাসরুমে ৫ ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা চলে। কোন ব্যাচের পরীক্ষা চললে ক্লাস নেয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। ক্লাসরুম সংকটসহ অন্য সমস্যা সমাধান করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দর শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা আবশ্যক।

No photo description available.

চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট কোন ক্লাসরুম না থাকায় অন্য বিভাগের কক্ষে ক্লাস করতে হয়। সে সব কক্ষে ক্লাস কিংবা পরীক্ষা থাকলে আমাদের ক্লাস বাতিল করতে হয়ে যায়। আমাদের বিভাগ ব্যবহারিক ভিত্তিকক্লাস ঠিক না করতে পারায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।

এ বিষয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ.এইচ.এম নাহিদ বলেন, ক্লাসরুম সংকটের কারণে একই ক্লাসরুমে ৫ ব্যাচের ক্লাস পরীক্ষা চালাতে হচ্ছে। এ জন্য অনেক সময় ক্লাস বাতিল করতে হয়। শিক্ষকরা ঠিকমত ক্লাস নিতে পারছেন না। ক্লাসরুম সংকটের কারণে বিভাগের একাডেমিক ও দাপ্তরিক দুই কাজেই ব্যাহত হচ্ছে।

আমাদের নির্দিষ্ট কোন ক্লাসরুম না থাকায় অন্য বিভাগের কক্ষে ক্লাস করতে হয়। সে সব কক্ষে ক্লাস কিংবা পরীক্ষা থাকলে আমাদের ক্লাস বাতিল করতে হয়ে যায়। -নাজমুল, শিক্ষার্থী, চারুকলা বিভাগ

সমাজ কল্যাণ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সভাপতি শ্যাম সুন্দর সরকার বলেন, আমাদের ক্লাসরুম আছে একটা। কোন পরীক্ষা থাকলে অন্যান্য ব্যাচের ক্লাস নেয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পরে। এটা নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সকলেই সমস্যায় পড়ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এসব সমস্যার সমাধান ধীরগতিতে হয়। নতুন ভবনগুলোর কাজ সম্পন্ন হলে আর শ্রেণি কক্ষ ও আবাসিক সংকট তেমন থাকবে না।


সর্বশেষ সংবাদ