৬০ বছর পর সংস্কারের ছোঁয়া, বদলে গেছে ইডেনের ‘মালঞ্চ’

ইডেন কলেজের মূল ক্যান্টিন মালঞ্চে ছাত্রীরা
ইডেন কলেজের মূল ক্যান্টিন মালঞ্চে ছাত্রীরা  © টিডিসি ফটো

প্রায় ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিষ্ঠান ইডেন মহিলা কলেজ। প্রতিষ্ঠানটির মূল ক্যান্টিন মালঞ্চ নতুন রুপে সেজে উঠেছে। কয়েকদিন আগেও যেটি ছিলো জরাজীর্ণ, পুরানো, ভাঙাচোরা—হঠাৎ-ই বদলে গেছে সেই চিত্র। এখন মূল ক্যান্টিনে শোভা পাচ্ছে নতুনত্ব আর আভিজাত্য। দীর্ঘদিন পরে হলেও কলেজ ক্যান্টিনের সংস্কারে খুশি ছাত্রীরা। ক্যান্টিনে খেতে আসা ছাত্রীরা এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সংস্কার করা ইডেন কলেজের ক্যান্টিন ‘মালঞ্চ’ ঘুরে দেখা গেছে, পুরানো ভবনের সংস্কার করে আরো আধুনিকতার সাথে ক্যান্টিনটি তৈরি করা হয়েছে। সংস্কারের পর ক্যান্টিনে নতুন টাইলস, চেয়ার, টেবিল, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আলোর সল্পতা দূর করতে ৮টি বাল্ব, গরমের কষ্ট থেকে বাঁচতে ৭টি সিলিং ফ্যান বসানো হয়েছে।

জানা যায়, ১৮৭৩ সালে ইডেন কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৯৬২ সালে আবাসিক/অনাবাসিক ছাত্রীদের জন্যে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে মূল ক্যান্টিন ‘মালঞ্চ’ চালু করা হয়। ১৯৬২ সাল থেকে শুরু করে ক্যান্টিন চালুর দীর্ঘ ৬০ বছর পরে ২০২২ সালে এসে পুরাতন ক্যান্টিনটি আবার নতুন করে সংস্কার করা হয়েছে।

ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্যান্টিনের ভেতরে রয়েছে ফুচকা, চটপটিসহ নানান ধরনের খাবারের সমারহ। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে রাত অবধি চলে এই আয়োজন। সকাল-দুপুর-রাত তিন বেলায় থাকে খাবারের নানান ধরনের আইটেম। আর এ মহাযজ্ঞ সাধনে রান্নার কাজ এবং ফাস্টফুড খাবার তৈরির জন্য রাখা হয়েছে ৬ জন বাবুর্চি। ক্যান্টিনের বাবুর্চিরা এখানে ১৫-২০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: বাইরে বের হলেই ইডেন ছাত্রীদের দিকে ধেয়ে আসছে তির্যক মন্তব্য

ক্যান্টিনের সংস্কারে খুশি ছাত্রীরা। সিনথিয়া আক্তার নামে ইডেন কলেজের ইতিহাস বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, আমি যখন ইডেন কলেজে ভর্তি হই তখন থেকে এই ক্যান্টিন আমার অনেক পছন্দের। আমি অনেক চা প্রিয় মানুষ। ক্যান্টিনের চা না খেয়ে কখনও আমি ক্লাসে যেতাম না। আগে কলেজে গিয়ে প্রথমই ক্যান্টিনে চা খেতে যেতাম। ক্যান্টিন আমাদের আড্ডা দেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা।

সিনথিয়া বলেন, আগের ক্যান্টিনের তুলনায় এখনকার ক্যান্টিন অনেক বেশি উন্নত ও সুন্দর। সংস্কারের পর ক্যান্টিনে আভিজাত্য এসেছে। খাবারের আইটেমেও সংযোজন এসেছে। ছাত্রীরা এতে বেশ খুশি। এটা আমাদের ভালোবাসার স্থান। আমাদের বন্ধুত্ব, সুখ, দুঃখের অংশীদার এই ক্যান্টিন। অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এখানে।
 
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী নুশরাত জাহান বুশরা বলেন, আমাদের ক্যাম্পাস আমাদের স্বপ্নের মতো। আর  ক্যান্টিন হলো আমাদের জন্য আরেকটি স্বপ্নের জায়গা। ক্যান্টিনের মনোমুগ্ধকর পরিবেশে বান্ধুবীদের সঙ্গে নিয়ে মুখরোচক খাবার আমাদের দিন দিন মুগ্ধ করে। আমি বারবার এই ক্যাম্পাস এবং ক্যান্টিনের প্রেমে পড়ে যাই। কলেজ ক্যান্টিন আমাদের সবার জন্য একটা মজার এবং ভালোলাগার স্থান।

তাসমিয়া সানি নামের এক ছাত্রী ক্যান্টিন নিয়ে বলেন, ক্যান্টিনের পরিবেশ আগের চেয়ে উন্নত এবং মানসম্মত। খাবারের কোয়ালিটি ও পরিবেশ অনেক ভালো। যথেষ্ট সু-ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকালের নাস্তা পরোটা থেকে শুরু করে নানান ধরনের খাবারের আয়োজন তাকে আমাদের জন্য। ক্যান্টিনের পরিবেশ সর্বদা কোলাহলমুক্ত থাকে। যার ফলে আমাদের ক্যাম্পাসের মতোই এটিও সবার কাছে প্রিয় জায়গা হয়ে উঠেছে।


সর্বশেষ সংবাদ