৬ শর্তে আন্দোলন স্থগিত করলেন ইউল্যাব শিক্ষার্থীরা

ইউল্যাবে শিক্ষার্থীদের সাথে সমঝোতা
ইউল্যাবে শিক্ষার্থীদের সাথে সমঝোতা  © টিডিসি সম্পাদিত

দেশের অন্যতম বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)-এ চলমান আন্দোলন অবশেষে সমঝোতার মাধ্যমে স্থগিত হয়েছে। উপাচার্য ইমরান রহমানের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবিতে আমরণ অনশনে থাকা শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। শিক্ষার্থীদের ৬ শর্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আশ্বাস পাওয়ার পর তাদের অনশন প্রত্যাহার করেছেন বলে জানায় তারা।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দিবা গত রাত সাড়ে ১০ টায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন অনশনে থাকা শিক্ষার্থী শিবলী সাদিক সিফাত।

তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ এর মধ্যস্থতায় আমাদের দাবিগুলো বিশ্ববিদ্যালয় রেজিষ্টারের কাছে জমা দিয়েছি। প্রশাসন আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন আগামী ৩ কার্য দিবসের ভিতর তারা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে। সেখানে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি থাকবে। কমিটির তদন্ত চলাকালীন সময়ে ভিসি তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহত থাকবেন। এই আশ্বাসে আমরা আমাদের অনশন থেকে রাত সাড়ে ১০টায় অব্যাহতি নিয়েছি। 

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে আমরণ অনশন ভাঙলেন ইউল্যাব শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীদের শর্তগুলো হলো-

১. শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ইমরান রহমান তার দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন। পুরো প্রক্রিয়ায় তদন্ত কমিটি ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ রাখবে। প্রো-ভিসি শুধুমাত্র কার্যসম্পাদন করবেন।  

২. আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে না।  

৩. অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কিংবা শিক্ষার্থীরা প্রকাশ্য ফ্যাসিস্ট হাসিনার ক্ষমতার অংশীদার কারো পক্ষে কোন প্রকার ভূমিকা গ্রহণ করবে না।  

৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে আপত্তিকর গ্রাফিতির জন্যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করা এবং আপত্তিকর লেখাগুলো নিজ দায়িত্বে মুছে ফেলার ব্যাপারে একমত হয়েছে।  

৫. অদ্য ২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় এর সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম আগামী কাল ৩ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে যথারীতি চলমান থাকবে।  

৬. জুলাই গণঅভ্যুত্থান এর পর গ্রাফিতি অংকনজনিত কারণে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করছে।

এর আগে, বুধবার (১ জানুয়ারি) সকাল থেকে ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে নিজেদের ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে কোনো আশ্বাস না পেয়ে বিকেল ৪টা থেকে মূল ফটকের বাইরে অবস্থান নেন তারা। পরে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।


সর্বশেষ সংবাদ