বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে আমরণ অনশন ভাঙলেন ইউল্যাব শিক্ষার্থীরা

ইউল্যাবে শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে
ইউল্যাবে শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে  © টিডিসি সম্পাদিত

দেশের অন্যতম বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) উপাচার্য ইমরান রহমানের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবিতে একদল শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে নেমেছিলেন। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে আমরণ অনশন ভাঙলেন ইউল্যাব শিক্ষার্থীরা।

অনশনে থাকা শিবলী সাদিক সিফাত দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন আগামী ৩ কার্য দিবসের ভিতর তারা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে। সেখানে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি থাকবে। কমিটির তদন্ত চলাকালীন সময়ে ভিসি তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহত থাকবেন। এই আশ্বাসে আমরা আমাদের অনশন থেকে রাত সাড়ে ১০টায় অব্যাহতি নিয়েছি।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুপুর ১টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে একাংশের শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করে। তারা ঘোষণা দিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ইউল্যাব প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবিকে উপেক্ষা করে ফ্যাসিবাদী আচরণ বজায় রেখেছে। উপাচার্যের নেতৃত্বে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি, গ্রাফিতি আঁকার কারণে শিক্ষার্থীদের শাস্তি প্রদান ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ বিনষ্ট করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) রেজিস্ট্রার লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফয়জুল ইসলাম বলেছেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিরসনে খুব দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। আমরা ৩ কার্যদিবসের মধ্যে একটি কমিটি গঠন করবো। কমিটি রূপরেখা অনুযায়ী দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবো।

শিক্ষার্থীদের বিভক্তীদূরসহ সমস্যা সমাধানে ক্যাম্পাসে গিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ ও ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা।

আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, এখানে যারা আছেন তারা আমাদের সহযোদ্ধা। আমরা সকলে একসাথে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করেছি। যেহেতু তারা আমাদের সহযোদ্ধা তাই তাদের মাঝে যেন কোন বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়। তাদের একত্র করার জন্য আমরা উপস্থিত হয়েছি। আমরা ইতিপূর্বে দেখেছি ঢাকার বিভিন্ন কলেজগুলোতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার জন্য একপক্ষ শিক্ষার্থীদের ভিতর অরজগতা তৈরি করেছে। তাই আমরা চাই না আমাদের ভাইয়েরা যেন কোন বিপদে না পড়ে। আমরা খুব দ্রুতই তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করতে চেষ্টা করছি।

এর আগে, বুধবার (১ জানুয়ারি) সকাল থেকে ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে নিজেদের ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে কোনো আশ্বাস না পেয়ে বিকেল ৪টা থেকে মূল ফটকের বাইরে অবস্থান নেন তারা। পরে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে অসম্মান এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হয়রানির দায় নিয়ে উপাচার্য ইমরান রহমানকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসর ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। ডিসিপ্লিনারি কমিটি ও প্রক্টরিয়াল বডির সবাইকে ছাত্র বিরোধী সিদ্ধান্তের দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে হবে। শিক্ষার্থীসহ সকল অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে ইউল্যাবের কোড অব কনডাক্ট যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে এবং মুক্তচিন্তা, মতপ্রকাশ এবং ব্যক্তিস্বাধীনতাকে হরণ করে, এমন সকল কলা কানুন ইউল্যাবের আইন কাঠামো থেকে বিলোপ করতে হবে। 


সর্বশেষ সংবাদ