ভারী বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসে ব্রাজিলে মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১০৪

ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ও ভূমিধসে ব্রাজিলের পেট্র্রোপলিশে অন্তত ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ও ভূমিধসে ব্রাজিলের পেট্র্রোপলিশে অন্তত ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।  © সংগৃহীত

ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোর উত্তরে অবস্থিত একটি পাহাড়ি অঞ্চল ঘেরা পেট্র্রোপলিশ নগরে  ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় ও ভূমিধসে অন্তত ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের গভর্নর ক্লদিও কাস্ত্রো জানিয়েছেন এটি ১৯৩২ সালের পর ব্রাজিলের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। স্থানীয় নিউজ পোর্টাল জি ওয়ান এর বরাত দিয়ে তুরস্ক ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আনাদুলু এ তথ্য জানিয়েছে। তবে ঠিক কতজন নিখোঁজ রয়েছেন সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, বন ও পাহাড় ঘেরা নয়াভিরাম এই শহরটিতে রয়েছে দেশের অধিকাংশ জাতীয় উদ্যানগুলো। শহরটি দেখতে অনেকটা ছবির মতই সুন্দর। সমুদ্র উপকূলে তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেলে ব্রাজিলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন একটু শীতলতা পাবার আশায় ছুটে যায় পেট্র্রোপলিশ শহরে। জানা যায়, উনিশ শতকের মাঝামাঝিতে ব্রাজিলের সম্রাট দ্বিতীয় পেড্রোর শাসনামলে এই নগরীর গোড়াপত্তন হয়। তিনি রাষ্ট্রের গ্রীষ্মকালীন বিচার কাজ এই শহর থেকে পরিচালনা করতেন।

আরও পড়ুন: এবারের এসএসসি-এইচএসসি কবে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

দুর্যোগের পূর্বে তোলা ব্রাজিলের পেট্রোপলিশ শহরের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।

 

নিখোঁজ হওয়া ৩৫ জন ব্যক্তির মধ্যে ২৪ জনকে ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি লোকজনদের উদ্ধারে ৪শর অধিক দমকল বাহিনী কাজ করছেন। উদ্ধারকাজ এখনো চলমান রয়েছে। হতাহতের পরিমাণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পেট্র্রোপলিশ নগর প্রশাসন।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এবিসি জানিয়েছে, ব্যাপক বন্যায় ‍ও ভূমিধসে অঞ্চলটির বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানকার অনেক বাড়িঘর ধসে গেছে। বন্যার পানিতে বহু ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে পানিতে ভেসে গেছে বহু আসবাবপত্র ও গাড়ি। এ পর্যন্ত ৫০টিরও অধিক ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। এতে গৃহহীন হয়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন শহরের অন্তত ৩৭০ জন লোক। এ পরিস্থিতিতে ওই এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন স্থানীয় পেট্র্রোপলিশ প্রশাসনের মেয়র।

আরও পড়ুন: স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে মঙ্গলবার

গত মঙ্গলবার দেশটির পেট্রোপোলিস শহরে মাত্র তিন ঘণ্টায় যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে ওই এলাকায় গেল এক মাসেও এত বৃষ্টিপাত হয়নি। মঙ্গলবার ওই সময়ে হওয়া বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২৫ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার। এই বৃষ্টিপাতের পর থেকেই দুর্যোগ শুরু হয়।

দমকল বাহিনীর পাশাপাশি ভূমিধসে নিখোঁজদের খুঁজে পেতে কাজ করে যাচ্ছেন দেড়শতাধিক সেনাসদস্য। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারো, বর্তমানে যিনি রাষ্ট্রীয় সফরে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন। তাছাড়া, পেট্রোপোলিস শহর কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে হতাহতদের স্মরণে তিনদিনের শোক ঘোষণা করেছেন।

প্রসঙ্গত, ভূমিধস ও বন্যা দুর্যোগে হতাহতের ঘটনা ব্রাজিলে নতুন কিছু নয়। এর আগে ২০১১ সালে দেশটিতে বন্যায় ৯শর বেশি লোকের মৃত্যু হয়। নিখোঁজ হন ১শর বেশি লোক।


সর্বশেষ সংবাদ