পুলিশ কোনো দলের তল্পিবাহক হয়ে বেআইনি কাজ করবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:২৬ PM , আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৩ PM

পুলিশকে কোনো দলের দাস না হয়ে জনগণের সেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। তিনি বলেন, পুলিশ কোনো দলের তল্পিবাহক হয়ে বেআইনি কাজ করবে না।
আজ রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সব নাগরিকের, কোনো দলের নয়, কোনো গোষ্ঠীর নয়, কোনো সম্প্রদায়ের নয়। বাংলাদেশ পুলিশ প্রজাতন্ত্রের স্বাধীন কর্মচারী, যারা সুনির্দিষ্ট আইন মেনে চলেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ রাষ্ট্রের সব নাগরিকের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করবে। তারা কোনো দলের তল্পিবাহক হয়ে এজেন্ডা বাস্তবায়ন কিংবা তাদের অন্যায্য ও অন্যায় নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে অপেশাদার আচরণ ও বেআইনি কাজ করবে না। আজকের এই সমাপনী অনুষ্ঠানে আপনারা এই শপথে বলীয়ান হবেন।
আরও পড়ুন: পুলিশের ৪ ডিআইজিকে বাধ্যতামূলক অবসর
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কর্তব্য পালন করতে হবে। থানায় এসে মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেই দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে দিতে হবে। জুলাই ও আগস্ট ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে যে নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছে সেই চেতনাকে ধারণ করে পুলিশ বাহিনীর গৌরবকে আরও সমুন্নত রাখতে হবে।
নবীন কর্মকর্তাদের কাছে সমাজে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর হয়ে প্রজাতন্ত্রের নাগরিক হয়ে ধর্ম, বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে আইন অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য সেবা প্রদানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
দুই দফা পেছানোর পর অবশেষে আজ ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি, শিক্ষানবিশ) প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবি
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অবসরপ্রাপ্ত) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজের অভিবাদন গ্রহণ করেন ও বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে অ্যাওয়ার্ড দেন। এ সময় মঞ্চে তার সঙ্গে পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলম ও পুলিশ একাডেমি সারদার প্রিন্সিপাল মাসুদুর রহমান ভূঞা উপস্থিত ছিলেন। সমাপনী কুচকাওয়াজে ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের তিনজন ও ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের ৫৭ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন।
পুলিশ একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, ৪০তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষণ শেষে গত বছরের ২০ অক্টোবর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এ জন্য দেড় হাজারের বেশি অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে আগের রাতে হঠাৎ করেই কুচকাওয়াজ স্থগিত করে দেয়া হয়। এরপর আবারও গত ২৪ নভেম্বর এই অনুষ্ঠানের জন্য দিন ঠিক করা হয়েছিল। পরে সেটাও স্থগিত হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে হলে আমাকে কবরে পাঠাতে হবে: ইশরাক
এই ব্যাচের মোট ৬৬ জন প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন যাদের অন্তত চার মাস আগে সমাপনী কুচকাওয়াজে অংশ নেয়ার কথা ছিল। নানা জটিলতায় সেটি আটকে যায়। অবশেষে বিভিন্ন অভিযোগে এ ব্যাচের ৬ শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি অব্যাহতি দেওয়া হয়।