‘আদিবাসী ছাত্র–জনতার’ বিক্ষোভে হামলার প্রতিবাদ জানালেন ২৭ বিশিষ্ট নাগরিক
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২৮ PM , আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২৮ PM
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে বুধবার ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র–জনতার’ ডাকা বিক্ষোভে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ২৭ বিশিষ্ট নাগরিক।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে ২৭ বিশিষ্ট নাগরিক বলেন, আদিবাসী ছাত্র-জনতার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুধবার দুই দফা আক্রমণে আদিবাসী ছাত্র-জনতার কমপক্ষে ১১ জন আহত হওয়ার কথা জানা গেছে। প্রথম দফা আক্রমণের সময় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও দ্বিতীয় দফা আক্রমণের সময় পুলিশ হামলাকারীদের সরিয়ে নিলেও এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো আইনি পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, ‘রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় এনসিটিবি ভবনের সামনে “আদিবাসী ছাত্র-জনতার” ওপর পরিকল্পিত হামলার ঘটনায় আমরা সংক্ষুব্ধ। সেই সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণের বিপরীতে “আদিবাসী” জনগোষ্ঠীর সমাবেশের ওপর হামলা রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এ হামলায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার আন্দোলনের কর্মীদের ওপর বেছে বেছে হামলা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এমনকি এই হামলাকারীদের অপরাধ আড়াল করতে আক্রমণের আলামত মুছে ফেলতে পুলিশকে রাস্তায় লেগে থাকা রক্ত পরিষ্কার করতেও দেখা গেছে। এ ধরনের ঘটনা পাহাড় ও সমতলে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়নের ধারাবাহিকতার প্রমাণ সামনে চলে আসে। এ ঘটনায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
বিবৃতিদাতারা বলেন, এ ধরনের অপরাধের ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা রাষ্ট্রীয় অসংবেদনশীলতা তথা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়নের ধারাবাহিকতার চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পাঠ্যপুস্তক থেকে আদিবাসী শব্দসংবলিত গ্রাফিতি বাতিলের দাবি মেনে নেওয়া ও এর প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হামলা করে আদিবাসী ছাত্র-জনতাকে রক্তাক্ত জখম করার ঘটনা বৈচিত্র্যময় জাতিগোষ্ঠীর বাংলাদেশের বিপরীতে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র কায়েমের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।
বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, ভিন্ন মত, পথ ও সাংস্কৃতিক চর্চার বিপরীতে উত্থিত ধর্মান্ধÑউগ্রবাদী মনস্তত্ত্ব¡গঠনের প্রবণতাকে রুখে দিয়ে দেশের সব মত, পথ, ধর্ম ও সংস্কৃতি চর্চার উপযোগী রাষ্ট্র বিনির্মাণে সংবেদনশীল রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তুলতে মনোনিবেশ করা জরুরি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন সুলতানা কামাল, রামেন্দু মজুমদার, সারওয়ার আলী, রাশেদা কে চৌধূরী, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, রানা দাশগুপ্ত, ফওজিয়া মোসলেম, নুর মোহাম্মদ তালুকদার, এস এম এ সবুর, খুশী কবির, এম এম আকাশ, রোবায়েত ফেরদৌস, সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, জোবায়দা নাসরিন, পারভেজ হাসেম, কাজল দেবনাথ, আবদুল ওয়াহেদ, সালেহ আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক, জীবনানন্দ জয়ন্ত, এ কে আজাদ, জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, অলক দাস গুপ্ত, জহিরুল ইসলাম জহির, দীপায়ন খীসা, রেজাউল কবির ও গৌতম শীল।