বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ সতর্কতা দেয়নি যুক্তরাজ্য
রাঙামাটিতে নিরাপত্তা জারি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ AM , আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৩ AM
বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ নিয়ে কোনো ধরনের সতর্কতা দেয়নি যুক্তরাজ্য। বরং বাংলাদেশে ভ্রমণে দেশটি সতর্কতা হালনাগাদ করেছে বলে জানান ফ্যাক্ট চেকার শোয়েব আবদুল্লাহ।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) তিনি তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করেন। সেখানে একটি শীর্ষ একটি দৈনিকের ‘বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ সতর্কতা যুক্তরাজ্যের’ শিরোনাম ও সংবাদ নিয়ে এবং যুক্তরাজ্যের সতর্কবার্তার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। যদিও পরে ওই সংবাদে সংশোধনী আনা হয়।
ওই সংবাদ নিয়ে শোয়েব আবদুল্লাহ বলেন, ‘নিউজে এফসিডিও-র বরাতে দাবি করা হয়েছে, ‘নির্বিচার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হতে পারে। জনাকীর্ণ এলাকা, ধর্মীয় স্থাপনা ও রাজনৈতিক সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন জায়গায় এই হামলা হতে পারে। কিছু গোষ্ঠী এমন ব্যক্তিদের টার্গেট করেছে, যাদের ইসলাম পরিপন্থী জীবনাচরণ ও মতামত রয়েছে বলে তারা মনে করে।’
মূলত ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাইকমিশন মঙ্গলবারের হালনাগাদ করা সতর্কবার্তায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাংলাদেশের কিছু অংশে ভ্রমণ না করতে বলেছে। তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের প্রত্যন্ত এলাকায় সহিংসতা ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে বলে হালনাগাদ করা সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে জরুরি ছাড়া ভ্রমণে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
যুক্তরাজ্য সতর্কবার্তায় উল্লেখ করে বলেছে, বিশ্বজুড়ে যুক্তরাজ্যের স্বার্থ ও ব্রিটিশ নাগরিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি রয়েছে। সেসব গোষ্ঠী ও ব্যক্তিও হামলা চালাতে পারেন, যারা যুক্তরাজ্য ও ব্রিটিশ নাগরিকদের তাদের টার্গেট মনে করেন। ব্রিটিশ নাগরিকদের সব সময় চারপাশ সম্পর্কে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। বিদেশে কীভাবে নিরাপদ থাকতে হয় এবং সন্ত্রাসী হামলার সময় কী করতে হবে, সে বিষয়ে যুক্তরাজ্যের কাউন্টার টেররিজম পুলিশের পরামর্শ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশন বলেছে, ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে বাংলাদেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা হয়, যাতে অনেক মৃত্যু ও বহু আহত হয়েছে।
পরিস্থিতি এখনো অস্থির রয়েছে উল্লেখ করে হাইকমিশন বলেছে, রাজনৈতিক মিছিল ও সমাবেশ এখনো অব্যাহত রয়েছে। এগুলো দ্রুত সহিংস হয়ে উঠতে পারে, যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। দেশজুড়ে শহর ও নগরে বিক্ষোভ ও ধর্মঘটের সময় সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে পারে। এসব ঘটনা প্রাণঘাতীও হয়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার একটি প্রভাব পুলিশের কর্মকাণ্ডের ওপর পড়েছে উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশন বলেছে, দেশজুড়ে কিছু থানায় উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেগুলোর বেশির ভাগ আবার সচল হয়েছে। তবে সব পুলিশ সদস্য কাজে ফেরেননি।
এই সতর্কবার্তার ব্যাখ্যা দিয়ে শোয়েব আবদুল্লাহ বলেন, ‘রাঙামাটিতে সন্তু লারমার জেএসএস ও প্রসীত খিস্যার ইপিডিএফের গোলাগুলির ঘটনায় সাজেক থেকে পর্যটকরা ফিরতে পারেননি। এটা চট্টগ্রামের নিয়মিত ঘটনা। তো এ ঘটনায় ব্রিটিশ হাইকমিশন একটা আপডেটেড সিকুরিটি অ্যালার্ট দিয়েছে। তাদের ম্যাপে (মানচিত্র) কালার গ্রেড করে সেটা উল্লেখও করে দিয়েছে। সেখানে তাকালেই দেখা যায় যে কেবল পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া বাকি প্লেসে ট্রাভেল এডভাইস মেনে নিয়ে যে কেউ ভ্রমণ করতে পারবেন।’
তিনি আরও জানান, এই সতর্কতা যেমন গত বছর ছিল, সামনেও থাকবে। এটা থার্ড ওয়ার্ল্ড দেশের ক্ষেত্রে সব সময় থাকে। ব্রিটিশ হাইকমিশনের ওয়েব পেজে গিয়ে ভারত, ইন্দোনেশিয়াসহ যেকোনো দেশের পেজে গেলে সেখানে এই রকম ‘Terrorists are very likely to try to carry out attacks’-এর একটা সেকশন পাওয়া যায়। এটা রেফারেন্স, এখানে বেসিক কিছু তথ্য দেওয়া থাকে পার্টিকুলার দেশের ঝুঁকি সম্পর্কে।
এ সময় শোয়েব আবদুল্লাহ তার পোস্টে বেশ কিছু স্ক্রিনশট ও লিংক যুক্ত করে দেন।