বিষখালী নদীতে ভাঙন, ঝুঁকিতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়

বিষখালী নদীতে ভাঙ্গনের কারণে ঝুঁকিতে মঠবাড়ি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া ভবনের অংশ
বিষখালী নদীতে ভাঙ্গনের কারণে ঝুঁকিতে মঠবাড়ি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া ভবনের অংশ  © টিডিসি

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বিষখালী নদীতে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন আটকাতে ফেলা জিও ব্যাগ দেবে গিয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে মঠবাড়ি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবন। এ ছাড়া ভাঙনের কারণে একটি বাজারের বিভিন্ন দোকানপাট, বসতঘর এবং মসজিদ নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর ধরে শতশত বাড়ি ও ফসলি জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই বাদুরতলা বাজারের দোকান গুলো পর্যায়ক্রমে নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে একাধিক বসতবাড়ি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাদুরতলা জামে মসজিদসহ বেশ কিছু স্থাপনা। এমনকি আমাদের মধ্যে এমন অনেক লোক রয়েছে মাটি দেয়ার জায়গা পর্যন্ত নেই সবকিছু নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীতে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও ভাঙনরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করার দাবি জানান তারা।

বাদুরতলা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মো. দুলাল বলেন, ‘গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে বাদুরতলা বাজারের ৩টি দোকানঘর নদীতে বিলীন হয়েগেছে এমন একটি খবর ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ও অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে যা সম্পূর্ণ গুজব এরকম ঘটনা গত ১ সপ্তাহের মধ্যে এখানে ঘটেনি।’ 

মঠবাড়ি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্বপন কুমার জানান, ২০০২ সালে আমি এই বিদ্যালয় যোগদান করি। তখন এই ইস্কুল নদী থেকে মিনিমাম আধা কিলোমিটার দূরে ছিল। ইতিমধ্যে স্কুলের কয়েকটি কক্ষ ইতোমধ্যে ভেঙে গেছে। এখন জিও ব্যাগ দেবে নতুন করে ভাঙনে বিলীনের পথে স্কুলটি। আতঙ্কের মধ্য দিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের এই ইস্কুলটি রক্ষা করার জন্য বাঁধ বা নদী শাসনব্যবস্থা না করেন তবে অচিরেই আমাদের এই বিদ্যালয়ের নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। যদিও বছর দুই তিন আগে কিছু বালির বস্তা ফেলেছিল কিন্তু তা দেবে নদীতে নেমে যাচ্ছে। আমরা শিক্ষকরা তিন থেকে সাড়ে তিনশ শিক্ষার্থী নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।

মঠবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজালাল হাওলাদার জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বাদুরতলা বাজার এলাকা ভাঙনে বিলীন হচ্ছে। কিছুদিন আগে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েকটি দোকান বিলীন হয়েছে। এখনো বাজারের অনেক দোকান ঝুঁকিতে রয়েছে। কয়েক দফা জিও ব্যাগ নদীতে ফেলা হলেও ভাঙনরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন: ‘মাহফুজ-আখতারদের সৃষ্টি করতে একটি জনগোষ্ঠীর দশকের পর দশক লেগে যায়’

রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ জানান, ঘটনাস্থলে ডিসি মহোদয় পরিদর্শন করেছেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুনিল চন্দ্র সেন বলেন, ‘বিদ্যালয়টি ওই স্থান থেকে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তথ্য উপাত্ত সহ আমাদের অফিসে পাঠাতে বলেছি। যা আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিতভাবে জানাবো।’

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ.কে.এম নিলয় পাশা বলেন, ‘বিষখালী নদীর তীরবর্তী রাজাপুর উপজেলার বাদুরতলা নামক স্থানে আকস্মিক কিছু ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা স্থানটি পরিদর্শন করেছি। উক্ত স্থানের জন্য আমরা সার্ভে রিপোর্ট তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’


সর্বশেষ সংবাদ