নিরাপত্তাহীনতায় পার্বত্য চট্টগ্রামে কঠিন চীবর দান উদ্যাপিত হবে না এবার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪১ AM , আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪১ AM
পাহাড়ে বিদ্যমান পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে এ বছর পার্বত্য চট্টগ্রামে (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কঠিন চীবর দান উদ্যাপন না করার ঘোষণা দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ।
রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে রাঙামাটি শহরের মৈত্রী বৌদ্ধ বিহারে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের। সিদ্ধান্তের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারও। সংবাদ সম্মেলনে তিন পার্বত্য জেলার ১৫টি বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের বলেন, ‘সম্প্রতি খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বিহারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটসহ শতাধিক দোকানপাট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় চার আদিবাসী ব্যক্তি নিহত হন। আহত হয়েছে অসংখ্য মানুষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের ওপর এভাবে বিনা বাধায় সাম্প্রদায়িক হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পবিত্র বিহারে আক্রমণ ও বুদ্ধমূর্তি ভেঙে ফেলার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এ ধরনের ঘটনা বারবার সংঘটিত হলেও প্রশাসনের আচরণ রহস্যজনক ও পক্ষপাতদুষ্ট। এ পর্যন্ত যতগুলো সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেছে কোনোটার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হয়নি।’
শ্রদ্ধালংকার মহাথের বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ সমাজ ও ভিক্ষুসংঘ বর্তমানে খুবই উদ্বিগ্ন-শঙ্কিত হওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতা এবং প্রশাসনের ওপর আস্থাহীনতা বোধ করছি। এ রকম চরম অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ সমাজ ও ভিক্ষুসংঘ আসন্ন পবিত্র ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যাপারে কোনো উৎসাহ বোধ না করায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শ্রদ্ধাবান দায়িক-দায়িকা ও পূজনীয় ভিক্ষুসংঘের মধ্যে আলোচনাক্রমে চলতি বছরের কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান না করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।’
আরও পড়ুন: ছাত্রদল নেতার আশ্রয়ে হলে থাকছেন ‘হামলায় অংশ নেয়া’ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা
সনের প্রতি কোনো আস্থা না থাকার পাশাপাশি বৌদ্ধ সমাজ ও ভিক্ষুসংঘ উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত। এমন নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের সব বিহারে কঠিন চীবর দান না করার ঘোষণা দেন শ্রদ্ধালংকার মহাথের।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বনভান্তে শিষ্য সংঘের সহসভাপতি সৌরজগৎ মহাথের, সাধারণ সম্পাদক তেজপ্রিয় মহাথের, পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদ বান্দরবানের সহসভাপতি জ্ঞানবংশ মহাথের প্রমুখ।