রাজনীতিতে যোগ দিতে প্রস্তুত—জানালেন জয়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০৩:২৪ PM , আপডেট: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০৩:২৪ PM
ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে গেছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ পরিস্থিতিতে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন—তিনি রাজনীতিতে যোগ দিতে প্রস্তুত। শুক্রবার (৯ আগস্ট) এই তথ্য জানিয়েছে ভারতের গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এর আগে রাজনীতিতে আসতে অনীহার কথা জানালেও বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে তার বাসায় বসে টাইমস অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে ফোন কলে জয় বলেন, ‘দল ও দলের কর্মীদের বাঁচাতে যা প্রয়োজন, তা আমি করব।’
জয় আরও জানান, (এই লক্ষ্য অর্জনে) প্রয়োজনে যদি আমাকে রাজনীতিতেও আসতে হয়, তাতেও পিছপা হব না।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা: গণতন্ত্রের আইকন যেভাবে একনায়ক
‘আমার মা তার বর্তমান মেয়াদ শেষে রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চেয়েছিলেন। আমার নিজের কখনো কোনো রাজনৈতিক উচ্চাশা ছিল না। আমি যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা। কিন্তু বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো দেখিয়েছে, সেখানে নেতৃত্বও সংকট তৈরি হয়েছে। দলের স্বার্থে আমাকে সক্রিয় হতে হচ্ছে এবং আমি এখন সম্মুখভাগেই রয়েছি।’
এমন সময় তার এই বিবৃতি এলো—যখন ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অপর জনপ্রিয় দল বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছেন এবং যুক্তরাজ্যে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা তার ছেলে তারেক রুহমান দেশে ফিরবেন, এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
গতকাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্যান্য উপদেষ্টারা শপথ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দেশ ছাড়ার আগে ভাষণ রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা, পাননি সুযোগ
এ পরিস্থিতিতে জয় আরও বলেন, আমি নিশ্চিত পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে এবং আমরা তাতে জিততেও পারি। বাংলাদেশে আমাদের দলের সমর্থকরা সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি।
তিনি দাবি করেন, তার মায়ের অন্য কোনো দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, আপাতত তিনি ভারতে আছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশে নির্বাচনের আয়োজন করলেই তিনি দেশে ফিরবেন। অল্প সময়ের নোটিশে আমার মায়ের জীবন বাঁচানোর জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
এর আগে বৃহস্পতিবার হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ এক্সে পোস্ট করে জানান, তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন। তিনি বাংলাদেশে অসংখ্য মানুষের মৃত্যুতে শোক ও মাকে দেখতে না পারার জন্য হতাশা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ওপর এক বার্তায় তিনি জানান, যারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তাদের উদ্দেশে বলছি: আমি আমার মাকে দেখতে পেলে খুবই খুশি হব, কিন্তু একইসঙ্গে আমি এমন কিছু করতে চাই না যাতে তার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে কোথায় যাবেন শেখ হাসিনা?
জয় জানান, ‘আত্মসমালোচনা’ প্রয়োজন।
‘নি:সন্দেহে অনেক ভুল হয়েছে। যখন আপনি দেশ চালাবেন, প্রতিদিন অসংখ্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ আত্মসমালোচনায় বিশ্বাসী এবং আমরা এর জন্য প্রস্তুত। কিন্তু এবার আমরা সে সুযোগ পাইনি। আমরা বুঝতে পারিনি, তাদের (বিক্ষোভকারীদের) দাবিগুলো মেনে নেওয়ার পরও পরিস্থিতির এতো দ্রুত অবনতি হবে’—যুক্ত করেন জয়।
জয় দাবি করেন, বিএনপি-জামাত জোট বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে পারবে না।
আরও পড়ুন: রাজনীতিতে আর ফিরবেন না শেখ হাসিনা: জয়
‘যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকে, তাহলে ভারতের পূর্ব সীমান্ত সুরক্ষিত থাকবে না। যদি বিএনপি ও জামাত একজোট হয়, তাহলে তা ভারতের জন্য মঙ্গলজনক হবে না, কারণ জামাত জঙ্গি কার্যক্রমে বিরত হবে না’, যোগ করেন জয়।
বাংলাদেশের নতুন সরকারের ওপর দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে তিনি ভারতের প্রতি আহ্বান জানান।