সরকারকে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান  © টিডিসি ফটো

সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণহানি ও সহিংসতার ঘটনায় চিন্তাবিদ, লেখক অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, আমরা প্রথমেই পরিষ্কার করে বলতে চাই এই হত্যাকাণ্ড রাষ্ট্রীয় মদদে হয়েছে, রাষ্ট্রীয় বাহিনী দ্বারা হয়েছে। যাদেরকে আমরা বলতে পারি প্রাইভেট বাহিনী। তারা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করবেন না, কারণ তারা নিজেরাই হত্যাকারী। আপনি হত্যাকারীর কাছে কীভাবে হত্যার বিচার চাইবেন। যারা নিজেরাই রাজাকার, তারা অপরকে বলেন রাজাকার।

বুধবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টায় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, বাংলাদেশ (ইউল্যাব) শিক্ষকদের আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানান শিক্ষকরা। 

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীকে ছাড়াতে গিয়ে পুলিশের হাতে লাঞ্ছনার শিকার ঢাবি শিক্ষিকা

তারা মুখে লাল কাপড় বেঁধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দাবির প্রতি সমর্থন জানান। এসময় কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের গণহত্যা করা হয়েছে দাবি করে এর বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানান বক্তারা। সমাবেশে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন তারা।

অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, এই হত্যাকাণ্ড অস্বীকার করার জন্য গতকাল শোক দিবসের নামে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সেখানে দেখবেন নিহত এবং আহতের জন্য কালো ব্যাচ পরিধান করতে বলেছেন, আমরা কিন্তু সেটা প্রত্যাখান করে লাল ব্যাচ পরেছি। নিহতদের তারা শহীদ বলতে রাজি নন। তারা যদি শহীদ না হোন, শুধু নিহত হোন—তাহলে তাদের জন্য প্রার্থনার প্রয়োজন কী। বর্তমান সরকারকে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে পদত্যাগ করতে হবে।

আরও পড়ুন: আন্দোলনকারীদের পক্ষে কথা বলায় চবির ২ শিক্ষকের বাসার সামনে বোমা বিস্ফোরণ

তিনি বলেন, এই পদত্যাগ ছাড়া নতুন কোনো ব্যবস্থা আমরা দিতে পারব না। আমরা বিশাল জনস্রোতের সঙ্গে আছি। আমরা কিন্তু ভেসে যাওয়ার জন্য আসিনি। বুদ্ধিজীবী হিসেবে আমাদের এখানে আসা দরকার। আমাদের এই সমস্যার পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা করা দরকার। কিন্তু সরকার সেদিকে না গিয়ে বলে এই দল সেই দলকে নিষিদ্ধ করা দরকার। সেটা কিন্তু মূল সমস্যার সমাধান নয়। শুধু সমস্যাকে আরও বাড়াবে। ক্যানসারের চাইতে আরও বাড়াবে।

শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করে সলিমুল্লাহ খান বলেন, শিক্ষার্থীরা গ্রেপ্তার কেন, মুক্তি দাও। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের শিক্ষার্থীরা যদি আসতে না পারে আমরা কাকে পড়াব, কী পড়াব—এমন প্রশ্ন জানিয়ে তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের জন্য বর্তমান পরিস্থিতিতে অবশ্যই আন্তর্জাতিক তদন্ত দরকার। আমরা আমাদের নিহত, আহত, গুম হওয়া এবং নির্যাতিত জাতীয় জনগণের পক্ষ থেকে সমর্থন জানাই।

আরও পড়ুন: জাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়টির অধ্যাপক সুমন রহমান, নাদিয়া রহমান, আজফার হোসাইন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শারমিনুর নাহার, লাবনী আশরাফি, মো: দিদারুল ইসলাম, কাব্য কৃত্তিকাসহ আরও অনেকে।


সর্বশেষ সংবাদ