নেত্রকোনায় পৃথক দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু

নেত্রকোনা জেলার মানচিত্র
নেত্রকোনা জেলার মানচিত্র  © ফাইল ছবি

নেত্রকোনার বিভিন্ন পৃথক দূর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছেন। রবিবার (২৩ জুলাই) জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ভিন্ন দুর্ঘটানা মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

পূর্বধলায় উপজেলায় পিকআপ ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে মার্জিয়া আক্তার (৩৮) নামে এক নারী ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। এসময় স্বামী সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা সুজাউর রহমান সাইমনসহ আরও ৪ জন আহত হন। 

রবিবার (২৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের পূর্বধলা উপজেলার গোহালাকান্দা ফকির বাড়ির মসজিদের সামনের সড়কে এ দূর্ঘটনাটি ঘটে। 

স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিনের মতো রবিবার সকালে তারা সিএনজিযোগে গৌরীপুর থেকে নেত্রকোনা অফিসে যাওয়ার সময় শ্যামগঞ্জ-নেত্রকোনা আঞ্চলিক মহাসড়কের পূর্বধলা উপজেলার গোহালাকান্দা ফকির বাড়ির সামনের সড়কে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা মাছের একটি পিকআপের সাথে মুখোামুখি সংর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পাঁচজন আহত হয়। পরে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ব্যাংক কর্মকর্তা মার্জিয়াকে মৃত ঘোষনা করেন।

পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম  ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সিএনজি ও পিকআপ আটক করা হয়। দুই গাড়ী চালক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অপরদিকে, এদিন বিকালে কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের কান্দাবাড়ি গ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে স্বামী ও স্ত্রী’র মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হচ্ছেন- উপজেলার ওই ইউনিয়নের বিষমপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে মো: সাইদুল ইসলাম (৩২) এবং সাইদুল ইসলামের স্ত্রী আফসানা (২৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা বিষমপুর গ্রামের সাইদুল ইসলাম রবিবার বিকালে তার স্ত্রী আফসানাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে একটি স্টিলের আলমারি রং দেয়ার পর বিদ্যুৎ সংযোগের পাশে রাখতে যায়। এসময় অসাধাবধানতাবশত কাটাউট খোলে নিচে পড়ে যায়। পরে স্টিলের আলমারিটি বিদ্যুতের বোর্ডে লেগে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে স্বামী ও স্ত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এদিকে একই উপজেলায়  রক্তাক্ত অবস্থায় আম্বিয়া খাতুন নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার ভোরে উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে শনিবার রাতে ঐ নারীর স্বামী আব্দুল মজিদ থানায় গিয়ে এ তথ্য দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে এবং মজিদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেয়।

নিহতের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম জানান, গত দুই বছর আগে আব্দুল মজিদের সঙ্গে তার বোন আম্বিয়া খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকসহ বিভিন্ন কারণে আম্বিয়াকে নির্যাতন করতেন।  এ ব্যাপারে থানায় একটি হত্যা মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।

কলমাকান্দা থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, বিদ্যুৎপৃষ্ঠের ঘটনায় পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছে। অন্যদিকে নারী মৃত্যুর ঘটনায় নিহত নারীর স্বামী মজিদ এসে থানায় খবর দেয়। আমরা খবর পেয়ে গিয়ে দেখি অর্ধেক বিছানায় অর্ধেক শরীর মাটিতে পড়া অবস্থায় লাশ পড়ে আছে। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোণা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।উভয়ই ঘটনায় অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অন্যদিকে জেলার দুর্গাপুর উপজেলার সোমেশ্বরী নদীতে বালুবাহী নৌকা ডুবে শামীম মিয়া (২০) নামে এক শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন। এসময় নদী সাঁতরে তীরে ওঠেন সাত শ্রমিক। রোববার (২৩ জুলাই) সকালে সোমেশ্বরী নদীর কামারখালী এলাকায় দুটি বালুবাহী নৌকার সংঘর্ষের ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।এখন পর্যন্ত নিখোঁজ শামীমের কোন সন্ধান পায়নি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। 

নিখোঁজ শামীম মিয়া দুর্গাপুর উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের ঝানজাইল গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে। ফায়ার সার্ভিসের দুর্গাপুর স্টেশন অফিসার মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, দুই বালুবাহী নৌকার সংঘর্ষে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এতে এক শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন। আমাদের ডুবুরি দলের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে।


সর্বশেষ সংবাদ