৮০০ টাকা দিলে প্রবেশপত্র মিলছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের

৮০০ টাকা দিলে প্রবেশপত্র মিলছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের
৮০০ টাকা দিলে প্রবেশপত্র মিলছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের  © সংগৃহীত

আগামী রোববার (৩০ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এ পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণে পরীক্ষার্থীদের থেকে অর্থ আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রবেশপত্রের বিনিময়ে ৮০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। যেসব পরীক্ষার্থী ৮০০ টাকা দিতে পারছে না তাদের প্রবেশপত্র আটকে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা আব্দুল হামিদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। অর্ধেক পরীক্ষার্থী এখনও প্রবেশপত্র হাতে পায়নি।

প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান ভূঁইয়ার মতে, ছাত্রছাত্রীরা সারা বছর বেতনসহ বিভিন্ন ফির টাকা দেয় না। পরীক্ষার সময়ই বিভিন্ন বকেয়ার টাকা আদায় করে থাকেন তাঁরা। সামনে এসএসসি ও কারিগরি পরীক্ষা। কারও বকেয়া ৮০০, কারও এক হাজার, কারও আবার ৫০০ টাকা বকেয়া আছে।

তিনি আরও বলেন, বকেয়ার টাকা আদায় করা হচ্ছে। প্রবেশপত্রের বিনিময়ে কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না। তাঁর দাবি, যারা বকেয়া দিতে পারে না, পরীক্ষার আগে তাদের বাড়িতে প্রবেশপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতিটি প্রবেশপত্রের বিনিময়ে ৮০০ টাকা আদায়ের নির্দেশ দেন। কিন্তু অনেক ছাত্রছাত্রী ৮০০ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে তাদের প্রবেশপত্র আটকে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগীরা। প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ শাখার পরীক্ষার্থী ২১ এবং কারিগরি শাখার পরীক্ষার্থী ৮৩ জন।

এক পরীক্ষার্থী জানায়, শুক্রবার দুপুরের আগে তার প্রবেশপত্রের বিনিময়ে শিক্ষক জাকির হোসেন ৮০০ টাকা নিয়েছেন। তার মতো অনেক ছাত্রছাত্রীর কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে।

সাবেক ইউপি সদস্য কাজিম উদ্দিন খান ও স্থানীয় বাসিন্দা রায়হান উদ্দিন আকন্দ, ফরিদ আকন্দ, জামাল উদ্দিনের তথ্যমতে, প্রবেশপত্রের বিনিময়ে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৮০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এমন অভিযোগ ছাত্রছাত্রীর মুখ থেকে শুনেছেন তাঁরা। এ নিয়ে দুই দিন ধরে ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা চলছে।

আরও পড়ুন: নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে আসার নির্দেশ

কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী জালাল বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও গড়াডোবা আব্দুল হামিদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের দাবি, প্রবেশপত্রের বিনিময়ে কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন বকেয়ার টাকা আদায় করা হচ্ছে প্রবেশপত্র দেওয়ার সময়। এরপরও বিষয়টি যাচাই করা হবে।

এদিকে, চলতি এসএসসি পরীক্ষায় মোট ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন। এ বছর এসএসসি ও সমামানের পরীক্ষায় ৫০ হাজার ২৯৫ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে। গতবার এসএসসি ও সমমানে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ২০ লাখ ২১ হাজার। শিক্ষার্থীদের স্কুলের নির্ধারিত পোষাক বা ইউনিফর্ম পরে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। আর কোনো স্কুলের নির্ধারিত স্কুল ইউনিফর্ম না থাকলে মার্জিত পোশাক পরে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে বলা হয়েছে।

এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২০২২ সালের তুলনায় ২৩ সালে মোট পরীক্ষার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ হাজার ২৯৫ জন। এর মধ্যে ছাত্রী বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৮ হাজার ৬০৯ জন। এবছর প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ২০৭টি, কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি। এবার মোট কেন্দ্র ৩ হাজার ৮১০টি এবং মোট প্রতিষ্ঠান ২৯ হাজার ৭৯৮টি।


সর্বশেষ সংবাদ