পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটির প্রতিটি দিনই ঈদের মতো

ঈদের ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনা
ঈদের ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনা  © টিডিসি ফটো

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছুটিতে গেছেন। বছরজুড়ে টানা মিড, কুইজ, প্রেজেন্টেশন, ল্যাব, ফাইনালের চাপ ও হাজারো ব্যস্ততার মাঝে এ ছুটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ঈদ উৎসব বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। তারা বলছেন, পড়াশোনা ও ব্যস্ততার বেড়াজাল ছিন্ন করে ঈদের ছুটিতে প্রিয়জনের কাছে ফিরে যাওয়ার অনুভূতি অসাধারণ।

এবারের ঈদ আনন্দ উদযাপন করতে কী পরিকল্পনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাৰ্থীরা? দীৰ্ঘ এই ছুটিতে কী করবেন তারা? শিক্ষাৰ্থীদের সেসব গল্প তুলে ধরেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাবিপ্রবি প্রতিনিধি—রিয়া মোদক

সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ করতে চাই
পড়াশোনা ও হাজারো ব্যস্ততার মাঝে যখন ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার সময় হয়, তখন যেন মনে একটা অসম্ভব সুন্দর প্রশান্তি কাজ করে। আমরা যারা দূরবর্তী জেলা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসি, বড় ছুটি ছাড়া সাধারণত আমাদের পরিবারের সঙ্গে একেবারেই সময় কাটানোর সুযোগ হয় না।

পরিবারের সঙ্গে আমাদের ঈদের দীর্ঘ ছুটির প্রতিটি দিনই ঈদের মতো লাগে। পরিবারের সাথে অনেকদিন পর দেখা ও ইফতারের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ঈদের আনন্দ। ঈদের বন্ধে শৈশবের সব বন্ধুদের সাথে দেখা হয়। সবাই তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থল থেকে ছুটি কাটাতে আসেন। এই অবসর সময়টা আমি আমার পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুদের সাথে একটি ভালো সময় কাটাবো। কিছু সামাজিক কাজের মাধ্যমে সকলের পাশে থাকার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

মো. রিয়াদুল ইসলাম
শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

আপনজনের সাথে হোক ঈদ আনন্দ
প্রায় ২ মাসেরও বেশি সময় পর আবার ঈদের ছুটিতে বাসায় আসা হলো। রোজার সময়ে ইফতারটা পরিবারের সাথেই করার চেষ্টা করি। ঈদ সবসময় গ্রামের বাড়িতে দাদি এবং বাকি সব কাজিনদের সাথে কাটানো হয়। ঈদের পর স্কুল-কলেজের বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি করতে করতে ছুটি শেষ হয়ে যায়। ঈদের পর সেমিস্টার ফাইনাল শুরু হবে, তাই কিছুটা পরীক্ষার চিন্তা মাথায় নিয়েই শেষ হবে এ ছুটি।

মায়মুনা ফায়ীযা মনীষা
শিক্ষার্থী, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

বন্ধুদের সাথে আড্ডা, মুভি-সিরিজ দেখতে চাই
ঈদ উপলক্ষে অনেকদিন বন্ধ পেলাম; একেবারে শুয়ে-বসে কাটানোর মতো। ছোটবেলা থেকে ঢাকায় থাকায় ঢাকার ঈদে ভালো লাগে। ঢাকায় অনেক বন্ধু আছে, ওদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ভালো লাগে। রোজার কারণে অনেক ছুটি পেলেও ছুটি উপভোগ করার জন্য কিছু পরিকল্পনাও করে রেখেছি।

ব্যস্ততার কারণে বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো কম হয়েছে; এই ছুটিতে ওদের সাথে প্রচুর আড্ডা দিতে চাই। যাদের সাথে সময় কাটাতে ভালো লাগে তাদের সময় দিতে চাই। এছাড়া, কিছু মুভি-সিরিজ আছে যেগুলো ব্যস্ততার কারণে দেখব দেখব করে দেখার সুযোগ হয় উঠেনি, সেগুলো দেখব।

ইয়াসির মুহাম্মদ ফাহাদ
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় 

অস্বচ্ছল পরিবারগুলোর মাঝে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে চাই
ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। প্রতিটি ঈদে মানুষের মাঝে অন্যরকম একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। ঈদ আসলে ধনী-গরিব সকলেই চায় নতুন কাপড় পড়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে। রমজান আসলে মনে হয় কখন ঈদের ছুটি পাবো, বাড়ি যাবো। আর ঈদেই ভাই-বোন, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজনকে একত্রে পাওয়া যায়।

ছোটবেলায় ঈদ আসলে চাওয়া-পাওয়া ছিলো ঈদের সালামি নিয়ে। সময়ের পরিক্রমায় এখন শুধু ইচ্ছে হয় অল্প এই ছুটির মাঝে সবার সাথে দেখা সাক্ষাৎ, কৌশলবিনিময়, বাল্যকালের বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া, ছোটবেলার স্মৃতিচারণ প্রভৃতি। এখন এ কাজগুলোই থাকে ঈদের ছুটি কাটানোর পরিকল্পনায়।

তবে যদি একটু ভিন্ন আঙ্গিকে দেখি ঈদটাকে, তবে আমার কাছে সমাজ ও রাষ্ট্র আমরা একটি পরিবার। আমরা নিজেদের ঈদের বাজেট থেকে কিছু টাকা বাচিয়ে আশেপাশের অস্বচ্ছল পরিবারগুলো মাঝে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে পারি। আমাদের আশেপাশের দরিদ্র ও দুঃখকষ্ট জর্জরিত মানুষগুলোর মুখে যদি ঈদের দিনে হাসির রেখা ফোটাতে পারি তবেই আমার ঈদটা আনন্দে কাটবে। এই ঈদ হোক ধনী-গরিব ভেদাভেদ ভুলে একটি সাম্যের সমাজ গড়ার, একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ার ঈদ। 

শেখ সাদী ভূঁইয়া 
শিক্ষার্থী,  যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ