পদ-গদি রক্ষায় এরা শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করতে পিছপা হন না

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা টাকার ব্যাগ আর পিস্তল রেখে শাবিপ্রবি ভিসির কুশপুত্তলিকা বানিয়েছেন
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা টাকার ব্যাগ আর পিস্তল রেখে শাবিপ্রবি ভিসির কুশপুত্তলিকা বানিয়েছেন  © ফাইল ছবি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে শাবির ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশের বিশেষত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যারা পরিচালনা করেন, তারা আচার-আচরণে প্রায়শই শাসকের ভূমিকায় আবির্ভূত হন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রজার মতো আচরণ করেন। তাদের শাসন এক পর্য়ায়ে স্বৈরশাসনে রূপ নেয়, আন্দোলনকারীদের দমন করতে কখনো ক্ষমতাসীন দলের সংগঠন ছাত্রলীগ, কখনোবা পুলিশকে লেলিয়ে দেন তারা।

আরও পড়ুন: শাবির ঘটনায় সিলেটের ২৫ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

তিনি আরও লিখেন, অথচ উপাচার্য়-প্রভোস্ট এসব পদে শিক্ষকরাই থাকেন। নিজের পদ-গদি রক্ষার জন্য এরা শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করতে পিছপা হন না। গোয়েন্দাদের সাহায্য নিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের নজরদারি করেন, মামলা ঠুকে দেন, রক্তাক্ত করেন। দলীয় রাজনীতিকদের মতো শিক্ষার্থীদের কাউকে শিবির, কাউকে মৌলবাদী, কাউকে জঙ্গি এসব অভিধা দিয়ে থাকেন।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে শুক্রবার রাতভর মশাল মিছিল করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এছাড়া দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীদের একাংশ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন অব্যাহত রাখেন। এতে কমপক্ষে ৭ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ফাহমিদুল হক ফেসবুক লিখেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নানান সমস্যা। বাজেট অপ্রতুলতার কারণে অনেক সেবাই মানোত্তীর্ণ নয়, আর দুর্নীতি-অব্যস্থাপনা তো আছেই। হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবনযাপন করে, সেখানে রয়েছে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের দাপট-নিপীড়ন। এসব নিয়ে শিক্ষার্থীরা তো কথা বলবেই। এসব নিয়ে আন্দোলন করা তাদের নাগরিক অধিকার।

আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেয় কে?

একই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছেন দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৫ বিশিষ্ট নাগরিক। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে পাঠানো বিবৃতিতে তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যৌক্তিক বলে উল্লেখ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কথা শোনার এবং ভাবার আহ্বান জানিয়ে ফাহমিদুল ফেসবুকে লিখেন, উপাচার্য়রা ভাবেন, তাদের রাজনৈতিক আদর্শের কিছু গুণ্ডা থাকবে ক্যাম্পাসে, আর বাকিরা যন্ত্রের মতো, দম দেয়া পুতুলের মতো ঘোরাফেরা করবে। কিন্তু তারা তো মানুষ! তাদের অনুভূতি আছে। নিপীড়িত হলে তারা কষ্ট পায়, বঞ্চিত হলে অভিযোগ ওঠায়। রেগে গিয়ে ইটও ছোঁড়ে। এসব কিছু ঘটার আগে তো তাদের কথা ভাবতে হবে, তাদের কথা মন দিয়ে শুনতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ