বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে নির্ধারণ করে দেওয়া হলো যোগ্যতা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২১, ০৮:৩৮ AM , আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২১, ০৮:৫৮ AM
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি। দীর্ঘ আলোচনা-সমালোচনার পর নীতিমালাটি অনুমোদন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী, প্রভাষক নিয়োগে প্রার্থীদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় সিজিপিএ-৩.২৫ থেকে ৩.৫০ থাকতেই হবে। প্রয়োজনে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে সেখান থেকে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
জানা গেছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক নিয়োগেও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ফলের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা ও ন্যূনতম প্রকাশনা কতগুলো থাকবে, তাও বলে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য নতুন নির্দেশিকায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। তবে ইউজিসির একজন সদস্য বলেন, আলোচনার ভিত্তিতেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ফলের বিষয়টি বাদ দিয়েছেন। কারণ শিক্ষক হতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ফলই গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষক নিয়োগের জন্য ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নয়নের যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণের নির্দেশিকায়’ এমন নিয়মকানুন রয়েছে। এতে শিক্ষকদের আপগ্রেডেশন নিয়মকানুনও বলে দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন অনুষদের বিভাগগুলোতে প্রভাষক হতে প্রার্থীকে অবশ্যই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষায় সিজিপিএ-৪ এর মধ্যে ন্যূনতম ৩.৫০ থাকতেই হবে। মানবিক অনুষদের বিভাগগুলোয় যেকোনো একটিতে ন্যূনতম ৩.৫০ এবং অন্যটিতে ন্যূনতম ৩.২৫ থাকতেই হবে। এমফিল বা পিএইচডি ডিগ্রি অতিরিক্ত যোগ্যতা হলেও স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের যোগ্যতা শিথিল হবে না।
বর্তমানে কোনো কোনো ক্ষেত্রে চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি থাকলেই শিক্ষক হওয়া যায়। তবে নতুন নির্দেশিকায় ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের বিভাগে শিক্ষক হতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। স্নাতকে সিজিপিএ-৪ এর মধ্যে ন্যূনতম ৩.৫০ থাকতেই হবে। স্থাপত্য বিভাগে অবশ্য কম হলেও হবে। কৃষি ও কৃষিপ্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কিংবা সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঁচ বছর মেয়াদি ডিভিএম বা সমমান পরীক্ষায় সিজিপিএ–৩.৫০ থাকতে হবে। তবে মেধাতালিকায় শীর্ষ ১০ এর মধ্যে থাকা ছাত্র-ছাত্রীরা প্রভাষক পদে আবেদন করতে পারবেন।
যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এখন স্নাতক ডিগ্রিধারীদেরকে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে তারা দুই বছর পর্যন্ত প্রচলিত নিয়মেই শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারবে। এরপর আর এ সুযোগ থাকবে না। সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগে যোগ্যতার পাশাপাশি প্রভাষক হিসেবে ন্যূনতম তিন বছরের সক্রিয় শিক্ষকতা করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে এমফিল ডিগ্রিধারীদের প্রভাষক পদে দুই বছর এবং পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের এক বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকলেই চলবে। এছাড়া স্বীকৃত জার্নালে ন্যূনতম তিনটি প্রকাশনা থাকতে হবে।
অপরদিকে সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগের জন্য সহকারী অধ্যাপক ন্যূনতম সাত বছরসহ ১২ বছরের সক্রিয় শিক্ষকতা করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের ক্ষেত্রে এ অভিজ্ঞতা শিথিল হবে। এছাড়া স্বীকৃত জার্নালে অন্তত ছয়টি প্রকাশনা থাকতে হবে। অধ্যাপক পদে নিয়োগে সহযোগী অধ্যাপক পদে ন্যূনতম ১০ বছরসহ ২২ বছরের শিক্ষকতা করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে নির্ধারণ করে দেওয়া হলো যোগ্যতা
তবে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রিধারীরা ছাড় পাবেন। পাশাপাশি ১২টি প্রকাশনা থাকতে হবে। এছাড়া নিয়োগের সময় প্রার্থীদের সনাতন পদ্ধতির ফল থাকলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা যাবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারনী নির্দেশিকা তৈরির কাজ শেষ করে ইউজিসি। পরে ওই মাসেই সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এখন সেটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় এই নির্দেশিকা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠানো হবে। ১০ পৃষ্ঠার ওই নির্দেশিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল ইউজিসি।