বাদ পড়েছেন গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, দীপু মনি কি ফের শিক্ষামন্ত্রী?

ডা. দীপু মনি, জাকির হোসেন, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও মোহাম্মদ সাদিক
ডা. দীপু মনি, জাকির হোসেন, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও মোহাম্মদ সাদিক  © ফাইল ছবি

শপথ নিয়েছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। আর আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনে শপথ নেবে নতুন মন্ত্রিসভা। টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। নানা দিক বিবেচনা করে তিনি নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। সেখানে কারা থাকবেন, আর পুরোনোদের মধ্যে কারা বাদ পড়বেন—এ নিয়ে সর্বত্র আলোচনা চলছে।

অবশ্য বর্তমান মন্ত্রীদের বেশিরভাগই আরেক মেয়াদের জন্য বহাল থাকবেন বলে জানা যাচ্ছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে অর্থ ও পররাষ্ট্রে নতুন মন্ত্রী আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া পরিবর্তন হতে পারে শিক্ষামন্ত্রী। তবে শিক্ষা উপমন্ত্রীর আরেক মেয়াদে বহাল থাকার সম্ভাবনাই বেশি। আর নির্বাচনের আগেই বাদ পড়েছেন বর্তমান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রী দেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে ডা. দীপু মনিকে অন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতে পারে। এছাড়া পরিবর্তন হচ্ছে শিক্ষা উপমন্ত্রীও। বর্তমান উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে প্রতিমন্ত্রী করা হতে পারে। পরে তাকে শিক্ষা অথবা গণশিক্ষায় দেওয়া হতে পারে। তবে শেষ সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।

এছাড়া বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি পরিবর্তন হলে তার স্থলে আসতে পারেন পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক। তিনি সুনামগঞ্জ-৪ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি ৯০ হাজার ৩৫২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ্ লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৩১ হাজার ৭১৮ ভোট।

আর জাকির হোসেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী থেকে বাদ পড়েছেন নির্বাচনের আগেই। কারণ জাকিরকে এবার নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তার কুড়িগ্রাম-৪ (রৌমারী, রাজীবপুর ও চিলমারী) আসনে নৌকা পেয়েছেন দলটির তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বিপ্লব হাসানকে। তিনি ৮১ হাজার ১৩২ ভোট পেয়ে বিজয়ীও হয়েছেন।

দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দলের মধ্যে গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের ২৯৯টি আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি দলের মধ্যে ২৭টি এই নির্বাচনে অংশ নেয়। এর মধ্যে ২৩ দলই কোনো আসনে জিততে পারেনি। আগের তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসনে জয়লাভ করে আরও একবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে। 

এদিকে, আজ বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকালে শপথবাক্য পাঠ করেছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। এদিন শেরেবাংলা নগরের সংসদ ভবনের পূর্ব ব্লকের প্রথম লেভেলের শপথ কক্ষে এ শপথ অনুষ্ঠিত হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথবাক্য পাঠ করান। এর আগে নিয়মানুযায়ী স্পিকার নিজে নিজেই শপথ গ্রহণ করেন।

জানা গেছে, সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ আলোচনা করে তাদের নেতা নির্বাচিত করবে। এরপর রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বসে তাদের নেতা নির্বাচিত করে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার স্বীকৃতির জন্য স্পিকারের কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ জানাবে।

নিয়মানুযায়ী, সংসদ নেতা নির্বাচন ও প্রধানমন্ত্রীর শপথের পর তার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নতুন সংসদের প্রথম অধিবেশন আহ্বানের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠাবেন স্পিকার। এরপর রাষ্ট্রপতি সংসদ অধিবেশন আহ্বান করবেন। জানা গেছে, আগামী ২৮ বা ৩০ জানুয়ারি এই অধিবেশন আহ্বান করা হতে পারে। অধিবেশনের শুরুতেই নতুন সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন হবে।


সর্বশেষ সংবাদ