২০২৪ সালে ভাইরাল ১০ সংলাপ কোনগুলো, জানেন?

উঠতি তারকা সিমরিন লুবাবা সাবেক ডিবি প্রধান হারুনকে ‘হাউন আঙ্কেল’ বলে সম্বোধন করেছিল
উঠতি তারকা সিমরিন লুবাবা সাবেক ডিবি প্রধান হারুনকে ‘হাউন আঙ্কেল’ বলে সম্বোধন করেছিল  © সংগৃহীত

বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটনাবহুল ছিল ২০২৪ বছরটা। এ বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। রাজনীতি শুধু নয়, বিভিন্ন ঘটনা চলতি বছর ছিল আলোচিত। এ বছর সোশ্যাল মিডিয়া একের পর এক ভাইরাল কন্টেন্টে মজে ছিলেন মানুষ। প্রতিবারের মতো এবারও বেশ কিছু সংলাপ ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কোনোটা রাজনীতিবিদের বক্তব্য, তো কোনোটা বিনোদন অঙ্গনের চটকদার সংলাপ, কোনোটা আবার টকশোতে ভাইরাল হওয়া মন্তব্য। গোটা বছরজুড়ে বাংলার মানুষদের মাঝে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল কিছু সংলাপ। ২০২৪ সালে আলোচিত তেমনই ১০টি সংলাপ তুলে আনা হলো পাঠকদের উদ্দেশে।

মুরুব্বি, উহুউহু
একটি ওয়াজ মাহফিলে বয়ান দিচ্ছিলেন মাওলানা মোস্তাক ফয়েজী। হঠাৎ মাহফিল ছেড়ে একজন উঠে চলে যেতে চাইলে তিনি বয়ানের মাঝেই বলে ওঠেন, ‘মুরুব্বি, উহু উহু।’ পরে এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর মোস্তাক ফয়েজীর ‘এই সোনামণি, বসো, উহু উহু’ সংলাপও নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায়।

হাউন আংকেল
গণঅভ্যুত্থান-পূর্ব বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ। কেউ কোনো সমস্যায় পড়লেই তার শরণাপন্ন হতেন। এই ‘মুশকিলে আসান’ হারুনকে নিয়েও একটি সংলাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

চলতি বছর একটি সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় উঠতি শিশু তারকা সিমরিন লুবাবা সাবেক ডিবি প্রধান হারুনকে ‘হাউন আঙ্কেল’ বলে সম্বোধন করে। এতে লুবাবা নেট দুনিয়ায় বেশ সমালোচনার মুখে পড়ে। গণঅভ্যুত্থানের সময়ে হারুনকে অনেকটা ব্যঙ্গ করেই ‘হাউন আঙ্কেল’ বলতে থাকেন।

পালাব না, কোথায় পালাব
‘আমরা এই দেশে জন্মেছি, এই দেশে মরব, পালাব না। কোথায় পালাব! পালাব না, প্রয়োজনে ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়ে উঠব’—বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে এক সময় এ কথা বলেছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

গণঅভ্যুত্থানের পর গা ঢাকা দিলে তার ‘পালাব না, কোথায় পালাব’ সংলাপটি বেশ আলোচনায় আসে। নেটিজেনদের অনেকেই তাকে মজা করে আরও কিছু নামে সম্বোধন করেন এবং এই সংলাপ জুড়ে দিয়ে প্রশ্ন রাখেন তিনি কোথায়।

আওয়ামী লীগের পতনের পর ওবায়দুল কাদেরের ‘শি হ্যাজ মেইড আস...’, ‘একটু অপেক্ষা করা যায় না, ‘বলব না, একটা শব্দও বলব না’, ‘মাসুদ তুমি কি কোনোদিনই ভালো হবে না’— সংলাপগুলোও দেয়ালে দেয়ালে দেখা যায়। আর সামাজিক মাধ্যমেও বেশ আলোচনায় চলে আসে।

নাটক কম করো পিও
‘নাটক কম করো পিও’ কুমিল্লার এক কিশোরের এই সংলাপ পুরো বাংলাদেশেই আলোচনার জন্ম দেয়। গণঅভ্যুত্থানের আগে থেকেই নেটিজেনরা এই সংলাপ ব্যবহার করছিলেন। পরে শেখ হাসিনার সঙ্গেও জুড়ে যায় এই সংলাপ। এ ছাড়া প্রেক্ষাপট মিলে গেলেই এই সংলাপ ব্যবহার করেন নেটিজেনরা।  

প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও
গ্রামের এক শিশুর ‘প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও’ সংলাপও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনায় ছিল। প্রেক্ষাপট মিলে গেলেই নেটিজেনরা সংলাপটি ব্যবহার করতেন। এই সংলাপ নিয়ে অনেকে টিকটক ভিডিও ও শর্টসও তৈরি করেন। এমনকি এটি নিয়ে ডিজে গানও তৈরি হয়।

আবেগ কাজ করেছে, বিবেক কাজ করেনি
চট্টগ্রামে নৃশংস এক হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বেরিয়ে আসে, শ্বশুরকে খুন করেন তার পুত্রবধূ। হত্যায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমে তিনি বলছিলেন, ‘আমি দোষী, আমি কি আপনাদের একবারও বলেছি আমি নির্দোষ। তখন আমার আবেগ কাজ করেছে, বিবেক কাজ করেনি।’ তার এই আবেগ-বিবেক কাজ করার সংলাপও নেটিজেনদের মধ্যে বেশ ছড়িয়ে পড়েছিল।

দেখেন যা ভালো মনে করেন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ চর্চিত বাক্য। এটি বেশি ছড়ায় অভ্যুত্থানের সময়। তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরা কোনো বিষয়ে পর্যবেক্ষণ বা পর্যালোচনা দিয়ে পরে লিখে দেন ‘দেখেন যা ভালো মনে করেন’। অভ্যুত্থানের পরও এই মন্তব্যটির ব্যবহার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়।

আপনি প্লিজ উত্তেজিত হবেন না
এ বছরই নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয় মেট্রো টু দ্য পয়েন্ট নামের একটি অনুষ্ঠানের ভিডিও ক্লিপ। যেখানে উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরী ও বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বাকবিতন্ডতায় জড়িয়ে পড়েন। এক সময় বিচারপতি মানিক দীপ্তির উদ্দেশে বলেন, আপনি কথা বলবেন না। প্রতি উত্তরে দীপ্তি বলেন, আপনি প্লিজ উত্তেজিত হবেন না।

এই মেয়ে চুপ করো
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বেশকিছু ভিডিও নেটপাড়ায় ভাইরাল হয় এ বছরই। এসব ভাইরাল ভিডিওর বেশিরভাগ ডায়ালগই টিকটকার লুফে নেন তাদের ভিডিও তৈরি করার জন্য। যার মধ্যে অন্যতম ‘এই মেয়ে চুপ করো’। ‘এই যে মহিলা এখন মুখটা বন্ধ কেন’ এ ডায়ালগটিও লোকমুখে বেশ জনপ্রিয় ছিল।

নাইস অ্যান্ড এট্রাক্টিভ
চলতি বছর সোশ্যাল মিডিয়ায় রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের ভাইরাল ডায়ালগ ছিল এটি। দেশের ২২তম এ রাষ্ট্রপতি চলতি বছর সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে সাংবাদিক ও গায়িকা নবনীতা চৌধুরীর একটি ছবির নিচে নাইস অ্যান্ড এট্রাক্টিভ লেখেন। এরপর থেকেই দেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা ছবির কমেন্ট বক্সে, কথাবার্তার মাঝপথে ব্যবহার করতে শুরু করে রাষ্ট্রপতির এ ডায়ালগ।


সর্বশেষ সংবাদ