মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে অব্যবস্থাপনা, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

নোয়াখালী সরকারি কলেজ
নোয়াখালী সরকারি কলেজ  © টিডিসি ফটো

যথাযথ মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন না করার অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালী সরকারি কলেজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে। প্রতি বছর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হলেও এবছর সেই চিত্র চোখে পড়েনি বলে দাবি করে ক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

আজ শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কলেজের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই অভিযোগ তুলেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘অপরিচ্ছন্ন ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে, যা ভাষা শহীদদের প্রতি অসম্মানজনক। পূর্বের মতো এবার প্রতিটি বিভাগ থেকে পৃথকভাবে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এছাড়াও, প্রতিবছর কলেজ অডিটোরিয়ামে যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হতো, সেটিও এবার হয়নি। শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে শুধু নামমাত্র আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এ বিষয়ে নোয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুর্শিদুর রহমান রায়হান ও সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বিশাল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে ভাষা শহীদদের যথাযথ মর্যাদায় শ্রদ্ধা জানাতে পারবে। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ এবার যে অব্যবস্থাপনার পরিচয় দিয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। ছাত্রসমাজ ভবিষ্যতে ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ রক্ষার শপথ নেবে।’

তবে উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম এ হাসান বলেন, ‘শুক্রবার কলেজ বন্ধ থাকায় প্রতিটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রভাতফেরিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। আগে প্রতিটি বিভাগ থেকে আলাদা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হতো, কিন্তু এবার অর্থ সাশ্রয়ের জন্য শুধুমাত্র শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। শহীদ মিনার পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে যারা ছিল, তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনি। আমি এটার সম্পূর্ণ দায়ভার নিচ্ছি।’

অভিযোগের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জাকির হোসেন বলেন, কলেজের কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা অবহেলা করেছে। ফলে অপরিচ্ছন্ন শহীদ মিনারে আমাদের শ্রদ্ধা জানাতে হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দায়িত্বে অবহেলার জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, আমরা জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো ব্যাজ ধারণ, প্রভাতফেরি, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং শিক্ষক পরিষদের আয়োজনে আলোচনা সভার আয়োজন করেছি। যদিও এবছর পূর্বের মতো বৃহৎ পরিসরে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ