প্রাথমিকের সার্কুলারে প্রতিবন্ধী কোটা পুনর্বহালে দাবি
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:৩৯ PM , আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:৫৭ PM
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে প্রতিবন্ধী কোটা পুনরায় বহালের দাবি জানিয়েছেন প্রতিবন্ধী চাকরি প্রত্যাশীরা। আজ রবিবার (২ এপ্রিল) বিকেলে টিএসসিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন এমন দাবি জানান তারা। অধিকার বঞ্চিত প্রতিবন্ধী ছাত্র সমাজেচর ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, অনতিবিলম্বে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আইনগতভাবে স্বীকৃত প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণের ব্যাবস্থা করতে হবে। প্রতিবন্ধীরা নানা প্রতিকূলতার সাথে সংগ্রাম করে দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেও বিশেষ কোটা সুবিধা না পেয়ে ক্রমাগতভাবে পিছিয়ে পড়েছে। প্রতিবন্ধী মানুষেরা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি বঞ্চিত হতে থাকলে আগামী প্রজন্ম হতাশাগ্রস্ত হয়ে শিক্ষা বিমুখ হবে। ফলে দেশে প্রতিবন্ধী ভিক্ষুকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে । এতে সর্বকালের শ্রেষ্ট বাঙালি বঙ্গবন্ধুর কল্পিত সোনার বাংলা এবং প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।
মোঃ আলিফ হোসেন নামের এক প্রতিবন্ধী বলেন, সংবিধানে আমাদের বিশেষ সুবিধার কথা বলা আছে কিন্তু বাস্তবে তার কোন প্রয়োগ নেই। সরকার আমাদের লোক দেখানো সুবর্ণ নাগরিক হিসেবে তুলে ধরে কিন্তু বাস্তবে কোন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়না। বাস্তবতা হচ্ছে, প্রাইমারি সহকারী শিক্ষকের মতো তৃতীয় শ্রেণী চাকরিতে আমাদের কোন কোটা নাই । অথচ নারী কোটা, বিজ্ঞান কোটা, পোষ্য কোটা সবই আছে। শুধু আমারাই বঞ্চিত হচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, সরকার বলেছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর চাকরিগুলোতে প্রতিবন্ধী কোটা আছে তবে এখানে কেন গ্রেডের দোহাই দিয়ে আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে? গত ২০২০ সালের সার্কুলারেও প্রায় তিনশর অধিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি বঞ্চিত হয়েছেন। এইযে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পরিকল্পিতভাবে বঞ্চিত করানো হচ্ছে এর দায়ভার কি রাষ্ট্রের উপর বর্তায় না? অথচ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২০ বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। ১% প্রতিবন্ধী কোটা থাকলেও চূড়ান্ত পর্যায়ে উত্তীর্ণ একজন প্রতিবন্ধীও বেকার থাকতো না। সরকারের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ জানাতে চাই যে, চলমান বিভাগীয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলোতে অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী কোটা সংযুক্ত করে পুনরায় প্রকাশ করেন । প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দু'বেলা ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার সুযোগ দিন।
কামাল হোসেন নামের আরেক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বলেন, যদি প্রতিবন্ধী সমাজের প্রতি সরকারের এমন নিষ্ঠুর দৃষ্টিভঙ্গি হয় তাহলে মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উচিত প্রশাসনকে গুলি করার নির্দেশ দিয়ে বাংলাদেশকে প্রতিবন্ধী শূন্য করা, যেমন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলার করেছিল। কারণ সরকারের এই বৈষম্যমূলক আচারণ হিটলারকেও পরাজিত করেছে। সরকারি চাকরি প্রদানের নামে প্রতিবন্ধী মানুষদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত সরকার প্রতারিত করে যাচ্ছে।
সাজ্জাদ হোসেন সাজু নামের আরেক প্রতিবন্ধী বলেন, সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর জনগোষ্ঠী বলতে কাদের বুঝানো হয়েছে এবং প্রতিবন্ধী মানুষেরা অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে কিনা? আমরা রাষ্ট্রের কাছে জানতে চাই। বিশেষ ব্যবস্থা বা কোটা পদ্ধতি পাওয়ার যোগ্যতা আসলেই কাদের? কেন প্রতিবন্ধী মানুষদের প্রতি সরকারের এই বৈষম্য অপরাধ হবে না আমরা জানতে চাই?