অবশেষে হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫, আয়োজনে কাটছাঁট

  © সংগৃহীত

জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের ঘটনায় সমালোচনার ও বিতর্কের মুখে পড়ে বাংলাদেশ পুলিশ। জনরোষের কারণে পেশাগত কাজে বাধা তৈরি হয়, আর তাতে থমকে যায় বাহিনীর স্বাভাবিক কার্যক্রম। দীর্ঘ আট মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও পুরোপুরি পুনর্গঠিত হয়নি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে পুলিশ বাহিনীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক আয়োজন ‘পুলিশ সপ্তাহ’ নিয়েও তৈরি হয় অনিশ্চয়তা।

তবে সেই অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে আগামী এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫’। নির্ধারিত সময়ের চার মাস পর আয়োজিত এই অনুষ্ঠান এবার হচ্ছে তিন দিনের, আগে পরিকল্পনায় ছিল সাত দিন। আয়োজনে এসেছে কাটছাঁট, বাদ দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু প্রচলিত পর্ব।

পুলিশ সদর দফতর জানায়, এবারের পুলিশ সপ্তাহে মাঠ পর্যায়ের সদস্যদের মনোবল বাড়ানো এবং জনসেবায় আরও কার্যকর ভূমিকা রাখাই মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ।

যা থাকছে এবারের পুলিশ সপ্তাহে

*আইজিপির সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের সদস্যদের সম্মেলন

*নাগরিক সভা

*পুলিশের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক

*বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা

*অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের মতবিনিময়

*আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক বিশেষায়িত ইউনিটগুলোর উপস্থাপনা


বাদ যাচ্ছে যেগুলো

*ঐতিহ্যবাহী পুলিশ প্যারেড

*রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ

*বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

*নৈশভোজ

*সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, “জনগণের প্রত্যাশা পূরণে পুলিশ কীভাবে আরও কার্যকর হতে পারে— তা খুঁজতেই এবারের আয়োজন। মূলত এসব বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে।”

সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা বলেন, “পুলিশ সপ্তাহে রাজনৈতিক বিবেচনায় পুরস্কার প্রদান থেকে বিরত থাকা উচিত। স্বচ্ছতা এবং পেশাদারিত্বই এখানে প্রাধান্য পাওয়া উচিত।”

অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনের মতে, “যেকোনো বাহিনীর জন্য বাৎসরিক সপ্তাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া আয়োজন না থাকাটা বাহিনীর সদস্যদের মানসিক বিকাশে প্রভাব ফেলতে পারে। সুস্থ বিনোদন তাদেরও দরকার।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময়েই পুলিশের জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো জরুরি। কারণ বর্তমান বাস্তবতায় বাহিনীর ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের এটাই হতে পারে উপযুক্ত সুযোগ।


সর্বশেষ সংবাদ