গুচ্ছে থাকার পক্ষে ১৯ ভিসি, সময় চেয়েছেন একজন

গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো  © টিডিসি ফটো

গুচ্ছভুক্ত থেকেই এবছরও ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে চান ১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সময় চেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি বলছে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেই তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে। আজ শুক্রবার ( ১৮ মার্চ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছের উপাচার্যদের সভায় এবিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সকাল থেকে এ সভা শুরু হয়ে শেষ হয় দুপুর আড়াইটার পর। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা স্বশরীরে সভায় উপস্থিত থাকলেও কয়েকজন ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক।

প্রথমবারের মতো ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত হয়ে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করে। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর ও আর্থিক ক্ষতি কমাতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও খুব একটা কাজে আসেনি এই পদ্ধতি। গুচ্ছ কমিটি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ও আর্থিক ক্ষতি কমাতে সক্ষম হয়নি। উল্টো ভোগান্তি বাড়িয়েছে বলে দাবি করেছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

আরও পড়ুন- গুচ্ছের সভায় ‘সেকেন্ড টাইম’ নিয়ে আলোচনা হয়নি

তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আলাদা আলাদা ভর্তির তারিখ দেয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অনিশ্চিয়তা থাকায় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পরে তা বাতিল করে পুনরায় ভর্তিতে আর্থিক ক্ষতির মুখেও পড়েন অনেকে। ভর্তি বিলম্বের কারণে অনেক শিক্ষার্থী জাতীয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হয়ে যান। যে কারণে শিক্ষার্থী সংকটে ভুগে গুচ্ছের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এখনো অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ২০২০-২০২১ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি।

আরও পড়ুন- গুচ্ছে আস্থা হারাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

ভোগান্তি বাড়ার কথা স্বীকার করেছেন টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূরও। তিনি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে আলাপকালে বলেছিলেন, প্রথমবারের আয়োজনের কারণে কিছুটা সমন্বয়হীনতা ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আলাদাভাবে ভর্তি করাতে গিয়ে শিক্ষার্থী সংকটে পড়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তির বিষয়টি তদারকি করলে এ সমস্যা হতো না। আশা করি সামনে এমন সমস্যা কমিয়ে আনা হবে।

সভায় উপস্থিত থাকা একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি জানিয়েছেন, গুচ্ছের গতবারের সংকটগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গুচ্ছ থাকবে নাকি আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, সংকট সমাধান কীভাবে করা যায় এসব বিষয় নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। ভিসিদ্বয় আরও জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকীরা গুচ্ছে থাকতে চেয়েছেন। অন্তত আরও একবার তারা গুচ্ছভুক্ত হয়ে পরীক্ষা আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সময় চেয়েছেন।

আরও পড়ুন- গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সংকট যেখানে

এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক গুচ্ছের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বলছেন, গুচ্ছ কমিটি ভর্তি পরীক্ষায় অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ধরে রাখার জন্য নিজস্ব পদ্ধতিতে ফেরার বিকল্প নেই।

এসব বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা গুচ্ছে থাকার পক্ষে মত দিয়েছেন। গতবারের ভুল-ত্রুটি শুধরে নিয়ে এগুতে চান তারা। তবে আমরা গুচ্ছে থাকা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেই নি। আমরা বলেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও শিক্ষক সমিতির সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবো।


সর্বশেষ সংবাদ