ফেনীতে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার পরীক্ষার্থী বেড়েছে সাড়ে ৫ হাজার

পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীরা
পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে। সাধারণত ফেব্রুয়ারিতে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও দেশের সাম্প্রতিক পট পরিবর্তনের কারণে তা দুই মাস পিছিয়ে এপ্রিলে শুরু হচ্ছে।

ফেনী জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারের এসএসসি ও সমমানে জেলার ৩৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এতে মোট ২৯ হাজার ৬০৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এর আগে ২০২৪ সালে জেলায় ২৪ হাজার ৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। সেই হিসেবে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৫ হাজার ৬০৪ জন।

সূত্র জানায়, পরীক্ষার্থীদের মধ্যে এবার এসএসসিতে ২২ হাজার ৫৪৯ জন, দাখিলে ৫ হাজার ৮৮৯ জন ও ভোকেশনালে ১ হাজার ১৭১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। 

এদিকে এবারের এসএসসি পরীক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ২০২৪ সালের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী সব বিষয়ে অনুষ্ঠিত হবে। সকল পরীক্ষা পূর্ণ নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল বাংলা ১ম পত্রের (আবশ্যিক) মাধ্যমে শুরু হওয়া পরীক্ষা আগামী ১৩ মে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ব্যবহারিক পরীক্ষা চলবে ১৫ মে থেকে ২২ মে পর্যন্ত।

সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এসব পরীক্ষা চলবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনি ও পরে লিখিত অংশের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, এই পরীক্ষাকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই প্রস্তুতিতে ঘাটতির কথা বললেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন যে, তারা আশানুরূপ প্রস্তুতি নিয়েই পরীক্ষার হলে যেতে প্রস্তুত।

ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টরেট স্কুলের শিক্ষার্থী নাদিরা আঞ্জুম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এবার ঈদের পরপরই পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য কিছুটা ব্যতিক্রম। গেল বছরজুড়ে দেশে আন্দোলন, ফেনীর বন্যাসহ বিভিন্ন কারণে  পড়ালেখায় কিছুটা প্রভাব পড়েছিল। তবুও কাঙ্ক্ষিত প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষার হলে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া মাদ্রাসার আশরাফ উদ্দিন নামের আরেক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে অনেক পড়া গোছাতে হয়েছে। তবুও চেষ্টা করেছি যতটা সম্ভব ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে। আশা করছি ভালো ফলাফল করতে পারবো। তবে যদি পরীক্ষা আরেকটু পিছিয়ে দেওয়া হতো, তাহলে আরও ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ মিলত।

সামিয়া আফরোজ নামের আরেক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ঈদের পরপরই পরীক্ষা শুরু হওয়াটা কিছুটা চাপ তৈরি করেছে। একদিকে ছিল ঈদের ছুটি, অন্যদিকে গত বছরে বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে ঠিকমতো পড়াশোনা হয়নি। যদি পরীক্ষা কিছুদিন পরে হতো, তাহলে প্রস্তুতির জন্য আরও সময় পাওয়া যেত। তারপরও ভালো করার আশা করছি।

সাইফুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গত বছরে গেল বন্যায় আমার ছেলের সব বই পানিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পরে বাধ্য হয়ে নতুন করে গাইড বইসহ অন্যান্য বই কিনতে হয়েছে। এর আগেও দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে ছেলের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটেছে। এসব মিলিয়ে প্রস্তুতিতে বেশ প্রভাব পড়েছে। তবুও দেশের বড় একটি পট পরিবর্তনের পর স্বল্প সময়ে পরীক্ষা আয়োজন একটি ইতিবাচক উদ্যোগ। যদি সংশ্লিষ্টরা প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখেন, তাহলে ছেলেমেয়েরা নিশ্চিন্তে ও ভালোভাবে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে বলে আশা করি।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফী উল্লাহ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এবারের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। পরীক্ষার সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।


সর্বশেষ সংবাদ