আইন থেকে নেতৃত্বে: ফজলে রাব্বি তাওহীদের পথচলা

২২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৩ PM , আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৪ PM
ফজলে রাব্বি তাওহীদ

ফজলে রাব্বি তাওহীদ © সংগৃহীত

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (চাকসু) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। গত বুধবার (১৫ অক্টোবর) ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টিতেই বিজয়ী হয়েছে শিবির। এতে তৃতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট হতে আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে বিজয়ী ফজলে রাব্বি তাওহীদ। তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৭,৩৭৬। 

চাকসু নির্বাচনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়েছেন জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব (৮,০৩১ ভোট) এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ইব্রাহিম রনি (৭,৯৮৩ ভোট)।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি তাওহীদ। তিনি ইতোমধ্যেই ক্যাম্পাসে পরিচিত মুখ। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি নিয়মিত আইনভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন। ২০২৪ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ভারতের গুজরাট ইন্টারন্যাশনাল মুট কোর্টে। যা তাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। 

শিক্ষার্থীদের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত ও ভেজাল প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট তার নেতৃত্বে শুরু হয় কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর যুব গ্রুপ কার্যক্রম। যার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে রাব্বি তাওহীদ দায়িত্ব পালন করছে। শিক্ষার্থীদের জন্য দোকানে মূল্য তালিকা সাঁটানো, দোকানিদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং ভোক্তা অধিকার আইন প্রয়োগে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপদ খাদ্য আন্দোলনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।  

আইন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতেও রাব্বি তাওহীদের ভূমিকা অনন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকে কয়েকজন সহপাঠীকে নিয়ে সে গড়ে তোলে লিগ্যাল এমপাওয়ারমেন্ট বাংলাদেশ (এলইবি) সংগঠন। যা প্রান্তিক ও দুর্বল জনগোষ্ঠীর মাঝে আইনি সহায়তা এবং অধিকার সচেতনতা বিস্তারে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বর্তমানে সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা। এলইবি ইতোমধ্যেই বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও কমিউনিটিতে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯, ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এবং সাইবার আইন বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। 

এছাড়াও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন দ্য নেটওয়ার্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল ল স্টুডেন্টস (নিলস) বাংলাদেশ চ্যাপ্টার-এর সভাপতি হিসেবে। ২০২৩ সালে নিলস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মুট কোর্ট প্রতিযোগিতায় সেরা অ্যাডভোকেট নির্বাচিত হয়ে তিনি নিজের দক্ষতার আরেকটি প্রমাণ রাখেন।

শুধু সচেতনতা সৃষ্টিতেই নয়, নীতিনির্ধারণেও রেখেছেন তার মেধার স্বাক্ষর। গত ২৫ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল পলিসি কম্পিটিশনে শিক্ষা খাতের নীতি প্রস্তাব উপস্থাপন করে ফজলে রাব্বি তাওহীদ ও তার দল চ্যাম্পিয়ান হন।

শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রম, নেতৃত্বগুণ ও একাডেমিক পারদর্শিতার সমন্বয়ের ফলে চাকসু নির্বাচনে রাব্বির সাফল্যকে অনেকেই প্রত্যাশিত বলছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এমন কাজ করেছেন যা তাকে একজন জনপ্রিয় ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বিজয়ের পর প্রতিক্রিয়ায় ফজলে রাব্বি তাওহীদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমার কাছে এটি শুধুই বিজয় নয়, এটি একটি দায়িত্ব। ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর দায়িত্ব। আগামী এক বছর আমার জন্য একটি বড় পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব, যারা আমার উপর আস্থা রেখেছে তাদের আস্থা অটল রাখতে এবং প্রতিটি শিক্ষার্থীর অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় কাজ করব।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নেতৃত্ব, দায়িত্ববোধ ও সামাজিক সচেতনতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে ফজলে রাব্বি তাওহীদ এখন এক অনুপ্রেরণার নাম বলে মনে করছেন তার সহপাঠীরা।

ঝালকাঠিতে আ. লীগ নেতাসহ ২৫ জনের মনোনয়নপত্র জমা
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
নির্বাচন নিয়ে জোটের সিদ্ধান্তকেই আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মেন…
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে পরিবার
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
অত্যন্ত সংকটময় সময় অতিক্রম করছেন বেগম খালেদা জিয়া: ডা. জাহিদ
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
সহকর্মীর গুলিতে আনসার সদস্য নিহত, অভিযুক্ত আটক
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ফোন নম্বর ছাত্রদল প্যানেলের কাছে ফা…
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫