ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নিম্নমানের খাবারে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ক্যান্টিন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ক্যান্টিন  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ক্যান্টিনগুলোতে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগ পুরনো। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, রান্নায় পোড়া তেল ও মানহীন মসলার ব্যবহার করার কারণে শিক্ষার্থীদের শরীরে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। দীর্ঘমেয়াদী নানা রকম শারীরিক জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। 

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় বিষয়টি আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে। গতকাল রাতে সলিমুল্লাহ মুসলিম (এস এম) হলের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী নুরে আদিব আনাম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গত বছর শুরুর দিকে বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সৈকত মাহমুদও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যান্টিন ও ক্যাম্পাসের আশেপাশের হোটেলের খাবার খেয়ে মানসিক অবসাদ, হৃদরোগ, আলসার, রক্তস্বল্পতা, মাথাব্যথাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। 

আরও পড়ুন- ঢাবি হলের ক্যান্টিনে খাবারের দাম বাড়লেও কমেছে মান

সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাসুদুর রহমান সামাজিক যোগাযাগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেন,  ‘অনেক দিন থেকে লিখবো লিখবো ভাবি, হয়ে উঠে না। আজ বোধহয় একেবারে সঠিক সময়। খাবার নিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। দোকানগুলোতে যে প্রকৃতির মুখরোচক খাবার রান্না করে প্রতিদিন (কাচ্চি,পোলাও,কালাভূনা,তেহারি), জিহ্বার লোভ সামলাতে না পেরে অনেকে টানা কয়েকদিন এসব খেয়েই কাটিয়ে দেই। কিন্তু, এসব খাবারে তেল ছাড়া আর কিছু মাত্র থাকে না। এভাবে চলতে থাকলে দেখা যাবে আমাদের এই চলমান হল সাথীদের বেশিরভাগের বয়স ৩০+ হলেই হৃদরোগ সংক্রান্ত নানা সমস্যা সৃষ্টি হবে। এখন হয়ত কিছুই বোঝা যায় না। কিন্তু, তেল-চর্বি ত আমাদের রক্তনালিতে দিনে দিনে বাসা বাধছে!!! হয়ত আমাদের সাথী #আনামের মত আমাদেরকেও আক্রমণ করে বসবে কোন একদিন।’

সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আল মামুন বলেন, খাবারের দাম বাড়ানোর কারণে পেটপুরে খাবার তো খেতেই পারছি না উপরন্তু মানহীন খাবারের কারণে পুষ্টিহীনতায় ভুগছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শামসুন নাহার হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ক্যান্টিনে সম্ভবত প্রথমদিনের তেল এখন খুঁজলেও আপনি পাবেন। প্রতিদিনই তেল এনে পুরাতন তেলের সাথে মিশিয়ে রান্না করে খাওয়াচ্ছে। শরীর ভালো থাকবে কীভাবে?  

অস্বাস্থ্যকর, অপরিচ্ছন্ন এমন পরিবেশে রান্নাবান্না হয় জানার পরও শিক্ষার্থীরা হল ক্যান্টিনের খাবার খেতে বাধ্য হন। বছর বছর খাবারের দাম বাড়ানো হয়, কিন্তু মান বাড়ে না। ক্যান্টিনগুলো ঘুরে দেখা যায়, ছোট্ট এক টুকরো মাংস, বাসি মাছের টুকরো, সামান্য একটু সিদ্ধ সবজি, ভাত আর পানির মতো পাতলা ডাল দেয়া হয়। এতে শিক্ষার্থীদের প্রাত্যহিক ক্যালরির চাহিদা কতটুকু পূরণ হয়, সেটা নিয়েও সংশয় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।

আরও পড়ুন- ঢাবিতে ক্যান্টিন বয়কে মেরে রক্তাক্ত করলো ছাত্রলীগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার থেকে জানা যায়, এখানে যারা চিকিৎসা নিতে আসেন তাদের অনেকেই পুষ্টিহীনতাজনিত সমস্যা নিয়ে আসেন। বেশিরভাগ সময়ে মেয়েরা এ সমস্যা নিয়ে বেশি আসেন বলে জানা যায়।   

চিফ মেডিকেল অফিসার ডা.হাফেজা জামান বলেন, হলের খাবারের মান ও পুষ্টি নিয়ে তো আমি বলতে পারবো না। হলের দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষকরা বলতে পারবেন। তবে ছাত্রীদের কাছে যেটা শুনেছি, সেটা হলো ক্যান্টিনে প্রতিদিনই মাছ, মাংস, ডিম দিচ্ছে। চিকিৎসা নিতে আসা ছাত্রীদের বেশির ভাগ সময় আয়রন, কৃমি ও ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেটের পাশাপাশি ভিটামিনের ঔষুধ দেই।

আরও পড়ুন- ঢাবির ক্যান্টিন মালিককে খাওয়ানো হল পচা মাংস

এসব বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, পুষ্টির জায়গা থেকে খাবারের মান আগে কেমন ছিল, এখন কেমন আছে এটি একটি গবেষণার বিষয়। গবেষণা ছাড়া এ বিষয়ে বলা যাচ্ছে না। তবে এখন যুবক বয়সে অনেক রোগ হচ্ছে। এটা আমাদের জীবন পদ্ধতি পরিবর্তনের কারণে হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence