রেমালের তাণ্ডবের প্রভাব ঢাবি ক্যাম্পাসজুড়ে, বিদ্যুৎহীন-পানি সংকটে হলের শিক্ষার্থীরা

রেমালের তাণ্ডবের প্রভাব ঢাবি ক্যাম্পাসজুড়ে
রেমালের তাণ্ডবের প্রভাব ঢাবি ক্যাম্পাসজুড়ে  © টিডিসি ছবি

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রাজধানীতে সোমবার (২৭ মে) ভোররাত থেকে হওয়া ঝড়ো বৃষ্টিতে গাছ ভেঙে বিদ্যুৎতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এখনও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন ও শ্যাডো। এছাড়া বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল পানির পাম্প থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে পানির সংকটে ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর, মুহসীন হল, রোকেয়া হল, কলা ভবন ও শহীদ মিনারের সামনে সব মিলিয়ে আটটি বড় গাছ ভেঙে পড়েছে। গাছগুলোর সঙ্গে কয়েকটি স্থানে বিদ্যুৎতের তারও ছিড়ে যায়। ফলে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু ভবন ও হল।

গাছ ভেঙে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল পানির পাম্প থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে পানির সংকটে ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান বলেন, গতকাল (সোমবার) থেকে পানি নেই, নেটওয়ার্ক নেই, ইন্টারনেট নেই। হলের একটি ভবনে পানি সরবরাহ থাকলেও বাকি দু'টি ভবনে কোনো সরবরাহ পানি নেই। কিন্তু শিক্ষকদের আবাসিক ভবনে ঠিকই রয়েছে। আজকে ওয়াসা থেকে পানির ট্রাক আনা হয়েছে কিন্তু যে পরিমাণ ছাত্রী সে তুলনায় খুবই অপ্রতুল। 

শামসুন্নাহার হলের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় হলে সকাল থেকে পানি নেই। এমনকি খাওয়ার কোনো পানি নেই। দৈনন্দিন কাজকর্ম করা যাচ্ছে না ফলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পানি না থাকার কারনে হলের ক্যান্টিনে খাবার দিতে দেরি হয়েছে।

এছাড়া গতকাল দুপুর থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (দুপুর ১ টা) বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন ও শ্যাডো। ফলে শ্যাডোতে ফটোকপি ও প্রিন্ট করতে আসা শিক্ষার্থীদের সকাল থেকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। 

এছাড়া সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টার অধিক বিদ্যুৎবিহীন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল ও শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক হল। পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের কবলে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শামসুন্নাহার হল, কবি সুফিয়া কামাল হল ও কুয়েত মৈত্রী হল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ৩য় বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান তন্ময় বলেন, গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিলো শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল। পরের দিন (আজ) পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ না থাকায় পড়ালেখা ও অন্যান্য কাজকর্ম করতে চরম ভোগান্তিতে পড়ি আমরা। হলের ২ গেটেই হাটুপানি জমায় চলাচলেও অসুবিধা পরতে হয়।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে ‍উপড়ে পড়েছে গাছ, প্রাণ গেছে পাখির — তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম মাকসুদুর রহমান  বলেন, কলা ভবনের সামনে গাছ পড়ে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় কিছু ভবন এখনও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। তবে গতকাল সারারাত ধরে কাজ করে বেশ কিছু সংযোগ ঠিক করা সম্ভব হয়েছে। আমি প্রধান প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি, এখনও পুরোদমে কাজ চলছে। শীঘ্রই বাকি লাইনগুলোতেও আমরা সংযোগ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হব।


সর্বশেষ সংবাদ