রাবির ২৮৪ আসন কমানোর প্রতিবাদে আন্দোলনের হুমকি 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে আগের দু’বছরের ধারাবাহিকতায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষেও আসন কমিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কর্তৃপক্ষ। তিন শিক্ষাবর্ষে মোট ২৮৪টি আসন কমানো হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত গণবিরোধী দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনসমূহ।

এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনগুলোর নেতারা। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সদস্য সজিব আলী প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ছাত্র ফ্রন্টের আহবায়ক ফুয়াদ রাতুল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন, নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের আহ্বায়ক তারেক আশরাফ, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের আহবায়ক বাবলু চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি রায়হান আলী যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আসন কমানোর ফলে উচ্চশিক্ষার সংকোচন ঘটছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভরতা ও শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ত্বরান্বিত হচ্ছে। আসন কমানোর অজুহাত হিসেবে প্রশাসন ক্লাসরুম, গবেষণাগার, আবাসন প্রভৃতি শিক্ষা উপকরণের সংকটকে দেখিয়ে থাকে। এসব সমস্যার সমাধান কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ বাড়িয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করলেই সম্ভব।

বরাদ্দ বাড়াতে রাষ্ট্র ও সরকারের অনুগত প্রশাসনের কোনো উচ্চবাচ্য নেই উল্লেখ করে আরও বলা হয়েছে, গত বছরের ১৮ জুলাই প্রকাশিত ১১২ কোটি ৯৭ লাভ টাকার অডিট গড়মিল শিক্ষার উন্নয়নে তাদের অনিয়ম ও দায়হীনতাকেই উন্মোচিত করছে।

আরো পড়ুন: রাত পেরোলেই শুরু ভর্তিযুদ্ধ, আবেদন চলছে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের

তারা আরো বলেন, আদর্শ ক্লাসরুমের জন্যে আগে চাই যোগ্য শিক্ষক। অথচ গত ১৩ জানুয়ারি শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ এনে নিজের স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করেছে আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. নূরুল হুদা। এছাড়া আবাসিক হলগুলোতে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের সিট বাণিজ্য ও দখলদারিত্ব প্রশাসনের আশ্রয় প্রায়ই সংঘটিত হচ্ছে।

তাদের ভাষ্য, প্রশাসনের বর্তমান গতিবিধি স্পষ্ট করে, তাদের অ্যাকাডেমিক উন্নয়নের বুলি আসন কমানোকে জায়েজ করার প্রচেষ্টা মাত্র। মূলত সাম্রাজ্যবাদী প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে প্রণীত ইউজিসির কৌশলপত্র বাস্তবতায়নের বহুমুখী পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই আসন কমানো হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের সংগঠিত হবার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, ইউজিসির কৌশলপত্র সবার বিশ্ববিদ্যালয়কে কেবল ধনীর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার রূপরেখা। যার আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রমাগত শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি, খাবারে ভর্তুকি বন্ধ করা, আসন কমানো, বাণিজ্যিক সন্ধ্যাকালীন কোর্স চালুসহ নানান গণবিরোধী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এতে উচ্চশিক্ষা অর্জন আর্থিকভাবে কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন নেতারা। ফলে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে এই নীলনকশার সর্বপ্রকার বাস্তবায়নের বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হুশিয়ারি দিয়ে তারা বলেন, অবিলম্বে সিট কমানোর গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। নতুবা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেন তারা।


সর্বশেষ সংবাদ