‘রিকশা চালকের ছেলে এতো টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখাস কী করে’

রাবি শিক্ষার্থীকে জেরা ছাত্রলীগ নেতার

অভিযুক্ত তাসকিফ আল তৌহিদ
অভিযুক্ত তাসকিফ আল তৌহিদ  © টিডিসি ফটো

শিক্ষার্থীকে মারধর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আব্দুল লতিফ হল ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই শিক্ষার্থী। আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ওই হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের কাছে একটি আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।

অভিযুক্ত তাসকিফ আল তৌহিদ আরবি বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও হলের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। তিনি রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে ভুক্তভোগী মফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি একই হলের ১০৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী জানান, “গতকাল সোমবার বিকেলে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগ নেতা তৌফিকের সঙ্গে দেখা হয়। তখন আমি কোথায় যাচ্ছি তিনি জিজ্ঞেস করেন এবং রিপোর্টটা হাতে নেন। তারপর আমার বাবার পেশা জানতে চাইলে আমি বলি, বাবা রিকশা চালক। তখন তিনি বলেন, ‘বাবা রিকশা চালক অথচ তুই এত টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখাস কী করে।’ এমনকি বাবাকে হেয় করে বিভিন্ন কথা বলতে থাকেন। তখন আমি জানাই, আমি একটি সামাজিক সংগঠন থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে চিকিৎসা করছি।”

তিনি আরও জানান, “এটা শোনার পর তিনি বিদ্রুপ করে বলেন, ‘তুই রান্না করে দশ জনকে খাওয়াবি।’ এ সময় আমি প্রতিবাদ করলে তিনি বলেন, ‘অমুক (কারো নাম উল্লেখ না করে) নাকি তিন হাজার টাকা পায়।’ আমি উত্তরে জানাই, আমার কাছে কেউ টাকা পায় না। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে তৌহিদসহ তার কয়েকজন অনুসারী মিলে আমাকে গেস্ট রুমে নিয়ে যায় এবং পিঠে একটি আঘাত করে গালিগালাজ করে ও হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেন।” এ ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নিকট অভিযোগপত্র দিয়েছি।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তা অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা তাসকিফ আল তৌহিদ বলেন, একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকে আবাসিক হলগুলোতে সিট দখল, মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সিট ছাড়ার হুমকি ও কক্ষ ঘুরে ঘুরে সিট জরিপ করছে নেতাকর্মীরা। তাদের চাপে সিট ছেড়ে অনেকে চলে যাতে বাধ্য হচ্ছেন।

এ ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কোনো শিক্ষার্থীকে সিট ছেড়ে যেতে বলতে পারে না। কারো বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেছি। পরবর্তীতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে সেজন্য কথা বলেছি। অভিযোগকারী শিক্ষার্থী তার নিজ কক্ষেই থাকবে।


সর্বশেষ সংবাদ