চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ বছরে চার সমাবর্তন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

বাংলাদেেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের অন্যতম এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। আজ বিশ্ববিদ্যালয়টি ৫৭তম বছরে পদার্পণ করলেও হাজার হাজার শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাত্র ৪টি সমাবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে চবি। এনিয়ে গ্র্যাজুয়েটদের মনে বিষাদের অন্ত নেই।

বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার জানিয়েছেন আগামী বছরের শুরুর দিকে সমাবর্তন করার প্রস্তুতি চলছে। তবে বারবার আশ্বস্ত করলেও বাস্তবে সমাবর্তন দেখতে পায়নি শিক্ষার্থীরা। তাই এবারে উপাচার্যের আশ্বাসেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। সমাবর্তন না হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছা এবং যথাযথ উদ্দ্যোগের অভাবকে দায়ী করছেন তারা।

সমাবর্তনে একজন শিক্ষার্থী তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়ে থাকেন। যা সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রায় ৭ বছর আগে ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি। এতে ২০০৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এবং ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পিএইচডি-এমফিলসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা অংশ নেয়।

এর আগে তৃতীয় সমাবর্তন হয় তারও ৮ বছর আগে ২০০৮ সালে। প্রথম সমাবর্তন হয় প্রতিষ্ঠার প্রায় ২৮ বছর পর ১৯৯৪ সালে এবং দ্বিতীয় বার সমাবর্তন হয় আরও ৫ বছর পর ১৯৯৯ সালে।

আরও পড়ুন: অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে, ডিগ্রি নেবেন রেকর্ডসংখ্যক গ্র্যাজুয়েট

‘৭৩-এর অধ্যাদেশে পরিচালিত অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে প্রায় ২ বছরে একবার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে প্রায় ৬ বছরে ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১০ বছরে একবার সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে ১৪ বছরে একবার সমাবর্তন হচ্ছে।

এছাড়াও নিয়মিত চট্টগ্রামের অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ও সমাবর্তন আয়োজন করছে যা চবি শিক্ষার্থীদের জন্য চক্ষুশূল হিসেবে প্রতীয়মান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে।

২০১১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সাময়িক সনদপত্র নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছেন ৩৩ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডিও সম্পন্ন করেছেন। কেউই পাননি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি।

২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পর একজন শিক্ষার্থীর একটি বড় চাওয়া হচ্ছে সমাবর্তন। তার আকাঙ্ক্ষা সে গাউন পড়বে এবং সহপাঠীদের সাথে মিলিত হবে স্বীকৃতসহ। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা যখন এটি সময়মতো পায় তখন আমাদের কষ্ট হয়।

সাইফুল বলেন, এটি আমাদের চাওয়া। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সদিচ্ছা এবং উদ্যোগের অভাবে নিয়মিত সমাবর্তন হচ্ছে না। প্রতি চার বছর পরপর এই সমাবর্তন করা এতো বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বড় কোনো বাধা নয়। কিন্তু তা হয় না। বর্তমান উপাচার্যের পঞ্চম সমাবর্তনের উদ্যোগেও আমরা আশ্বস্ত হতে পারছি না, আয়োজন শুরু হলেই কেবল আশাবাদী হবো।

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গত বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার জানিয়েছেন চবির পঞ্চম সমাবর্তন ২০২৩ সালের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির সিডিউল অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে বা মার্চের শুরুতে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এই লক্ষ্যে কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।


সর্বশেষ সংবাদ