৪৩তম বিসিএস লিখিত: শেষ সময়ে করণীয়
- সাদরুল আলম সিয়াম
- প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২২, ১০:১৮ AM , আপডেট: ২১ জুলাই ২০২২, ১০:৩০ AM
বিসিএস লিখিত পরীক্ষা আমার সবচেয়ে স্টেসফুল পরীক্ষা ছিল কারণ এতো বড় বড় সিলেবাসে প্রতিদিন পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। সবকিছু চোখ বুলিয়ে যাওয়ারও সময় পাওয়া যায় না। নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
১। হাতে যতটুকু সময় আছে, তার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করুন।
২। হাতের লেখা সুন্দর করার পিছনে সময় ব্যয় না করে, স্পষ্ট ও কাঁটা-ছেড়া মুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।
৩। সর্বোচ্চ গতিতে লিখতে হবে। এখন থেকেই প্রতিদিন কিছু কিছু লিখে হাত ফ্রি করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় ১ নম্বরের জন্যে ১.২ মিনিট সময় পাবেন, ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ১ নম্বরের জন্যে ১.৮ মিনিট পাবেন। এর বেশি সময় কোনভাবেই নেওয়া যাবে না।
৪। যেভাবেই হোক ফুল আন্সার করে আসতে হবে।
৫। উত্তরগুলো ছোট ভূমিকা, মূল উত্তর, উপসংহার দিয়ে লেখার চেষ্টা করুন।
৬। ডাটা দেওয়ার টেবিল পেন্সিল দিয়ে আঁকতে পারেন। ডাটা ব্যবহার করলে সাথে যথাযথ রেফারেন্স ব্যবহার করুন। অযথা ডাটা, চার্ট, গ্রাফ, কোটেশন ব্যবহার না করে প্রাসঙ্গিক ডাটা ব্যবহার করুন। আপনার ডাটা, চার্টের সবচেয়ে বড় সোর্স অর্থনৈতিক সমীক্ষা।
৭। কোন একটা পরীক্ষা খারাপ হলে হতাশ বা ঘাবড়ে যাবেন না। পরবর্তী পরীক্ষা দিয়ে কভার করার সুযোগ পাবেন। মনে রাখবেন, বিসিএস পরীক্ষা হচ্ছে একটা ম্যারাথন দৌড়।
৮। Quantitative লেখা না লিখে Qualitative লেখা লিখার চেষ্টা করুন।
৯। একটি খাতায় সব সাবজেক্টের ছোট খাটো তথ্যগুলো লিখে রাখতে পারেন, যাতে পরীক্ষার আগের রাতে দেখে যেতে পারেন।
১০। অবশ্যই অবশ্যই স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখুন। বেশি প্রেশার নিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে গেলে সবই যাবে।
১১। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন, যাতে তিনি আপনার জন্যে সব কিছু সহজ করে দেন।
পরীক্ষার সময় করণীয়
১। মাথা ঠাণ্ডা রাখুন।
২। পরীক্ষার হলে যথাসম্ভব আগে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। ঢাকার পরীক্ষার্থীরা যানজটের ব্যাপারটি যথাসম্ভব মাথায় রাখবেন। ৪০তম বিসিএস রিটেনে আমাদের হলের কয়েকজন প্রার্থী ভিআইপি প্রটোকল-এর কারণে যানজটে পড়ে কেন্দ্রে ১০-১৫ মিনিট দেড়ি করে পৌঁছেছিলেন।
৩। ঘুম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, একই সাথে রিভিশনও। আপনি যতটুকু ঘুমিয়ে সারভাইভ করতে পারবেন, ততটুকুই ঘুমান। সবার সাথে তাল না মেলানোই ভালো।
৪। আত্মবিশ্বাস খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোনভাবেই আত্মবিশ্বাস হারাবেন না।
৫। কোনভাবেই দেখাদেখি করার ব্যাপার মাথায়ই আনবেন না। পিএসসি এই ব্যাপারে এখন খুবই স্ট্রিক্ট।
যারা প্রস্তুতি খারাপ থাকায় পরীক্ষা দিতে চাচ্ছেন না
কোনভাবেই এ ধরনের চিন্তা মাথায়ও আনবেন না। বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি শুধুমাত্র পিএসসি’র দেওয়া সিলেবাসের উপরই নির্ভর করে না। ছোট থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত এ যাবতকালে যা কিছু পড়েছেন, আপনার বেসিক নলেজ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণাসহ অনেক কিছুর উপরই নির্ভর করে। আপনার পরীক্ষা কেমন হবে আপনি জানেন না!
শেষ সময়ে যতটুকু সম্ভব প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে দেন। কে জানে এই পরীক্ষা হয়তো আপনার জীবন পাল্টে দিতে পারে! আর কিছু না পেলেও অভিজ্ঞতা তো অর্জন করলেন, সেটাও বা কম কী! আপনার তো আর হারানোর কিছু নেই।
মনে রাখবেন "When you want something, all the universe conspires in helping you to achieve it." সবার জন্যে দোয়া ও শুভকামনা রইলো।
লেখক: সাদরুল আলম সিয়াম,
প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত, ৪০তম বিসিএস