প্রচণ্ড গরমে রুম ঠাণ্ডা রাখবেন যেভাবে

প্রচন্ড গরমে রুম ঠান্ডা রাখবেন যেভাবে
প্রচন্ড গরমে রুম ঠান্ডা রাখবেন যেভাবে  © সংগৃহীত

বৈশাখের  আগমন যেন সূর্যকেও পৃথিবীর কাছে নিয়ে এসেছে। প্রচন্ড গরমে নাভিশ্বাস হয়ে ওঠেছে জনজীবন। যে হারে গরম বাড়ছে তাতে বাইরে বেরনো দায়। খুব দরকারি কোনও কাজ না থাকলে ঘরবন্দি হয়েই কাটাতে হচ্ছে বেশিরভাগ সময়টা। কিন্তু এই গরমে যেন ঘরে থাকাও দায়। মনে হয় জ্বলন্ত কোন চুলায় বসে আছি।

পবিত্র রমজান মাস হওয়াতে অধিকাংশ মানুষই পুরো দিন কাটাচ্ছেন কোনো কিছু না খেয়ে। এতে করে শরীরে যেন গরম আরও বেশি লাগছে। এই সময়টায় নিজের বাসা/ঘর টা হালকা শীতল  থাকলেই যেন প্রাণ জুড়িয়ে যায়। কিন্তু যাদের এসি নেই তারা কি করে ঘর শীতল করবেন?

বেশিরভাগ মানুষের ঘরে ফ্যানই সঙ্গী। কিন্তু এই গরমে ফ্যানও যেন ক্লান্ত হয়ে গেছে। তাই জেনে নিন ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ঘরের ভেতর ঠান্ডা রাখবেন যেভাবে।

১. জানালায় মোটা পর্দা ব্যবহার: সূর্যের আলো যাতে রুমের ভেতর সরাসরি প্রবেশ করে রুম গরম করতে না পারে সেজন্য জানালায় ভারী পর্দা ব্যবহার করা উচিত। হালকা রঙ এর পর্দা রোদ আটকায় কম। সূর্যাস্তের সময় বা  রাতের বেলায় পর্দায় হালকা পানি স্প্রে করে জানালা খুলে দিলে সুন্দর ঠান্ডা বাতাস রুমে ঢুকবে।

২. বরফ ও ফ্যান: ফ্যানের নিচে বা সামনে বরফভর্তি বালতি  রেখে ফ্যান চালিয়ে দিন। এতে করে ফ্যান চালানোর সময় ঠান্ডা হাওয়া বইবে। বরফ না থাকলে এক বালতি ঠান্ডা পানি রেখেও ফ্যান চালিয়ে দেখতে পারেন, গরম কিছুটা হলেও কমবে।

৩. হালকা রংয়ের বিছানার চাদর: রুমের আসবাবে যত হালকা রঙ এর কাপড় ব্যবহার করতে পারেন ততই ভালো। বিছানার চাদর, বালিশের কভারে ব্যবহার করুন সাদা কিংবা হালকা রঙ এর সুতির কাপড়।

৪. গাছ লাগানো: এই প্রচণ্ড গরমের অন্যতম মুখ্য কারণ কিন্তু গ্লোবাল ওয়ার্মিং। পৃথিবীর বুক থেকে গাছপালা যতই কমছে, ততই দুর্যোগ বাড়ছে। প্রচণ্ড গরম থেকে বাঁচার এক অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে গাছ লাগানো। বাড়ির বেলকোনিতে কিংবা জানালার সাথে ছোট ছোট টবে করে বিভিন্ন গাছ লাগালে এগুলো ঘরের গরম অনেকটাই কমিয়ে দেয়, বাইরের গরম হাওয়া অনেকটা পরিশুদ্ধ হয়ে ঘরে ঢুকে। এতে রুম শীতল থাকবে সারাদিন।

৫. ঘর পরিপাটি রাখা: বলা হয়ে থাকে "চোখের শান্তি মানে মনে শান্তি"। ঘরে আসবাবপত্র বেশি থাকলে কিংবা অগোছালো থাকলে তা রুমে যেমন ঘিঞ্জি, গুমোট পরিবেশ সৃষ্টি করে, তেমনি অস্বস্তিতে নিজের আরও বেশি খারাপ লাগা শুরু হয়। তাই আসবাবপত্র রাখুন সীমিত, গোছানো। এতে করে দেখতেও ভালো লাগবে, আর ঘরে হাওয়া চলাচল নির্বিঘ্ন হবে।

৬. লাইটের ব্যবহার কমানো: দিনের বেলা যতটুকু পারা যায় ঝকঝকে লাইটের ব্যবহার কমানো উচিত, যাতে বাল্বের তাপ ঘর গরম না করে। এতে করে ঘরের গরম আবহাওয়া কিছুটা হলেও কমবে। আর বাতি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যবহার করা উচিত৷

৭. চুলার ব্যবহার কমানো: যেহেতু রান্নাঘরের সাথে বাকিঘর সংযুক্ত থাকে, তাই চেষ্টা করুন কম সময়ে রান্না শেষ করা। চুলার তাপ পুরো ঘরকে আরও বেশি গরম করে তুলে।

৮. রাতে জানালা দরজা খুলে দেয়া: দিনের বেলায় সূর্যের তাপ আটকাতে দরজা জানালা বন্ধ রাখলেও, সূর্য ডুবার সাথে সাথে দরজা জানালা খুলে দেয়া। এত করে গরম বাতাস ঘর থেকে বের হয়ে যাবে এবং আদ্রতা ঘরে প্রবেশ করবে। রাতে জানালা খোলা রাখার পাশাপাশি এক্সস্ট ফ্যান চালিয়ে রাখা ঘর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে। আর্দ্র বাতাস: ঘর ঠাণ্ডা রাখতে ফ্যানের পেছনে ভেজা কাপড়, ঠাণ্ডা বস্তু, এক বাটি বরফ বা ঠাণ্ডা পানির বোতল রাখলে ঠাণ্ডা বাতাস ছড়ায়, ফলে ঘর ঠান্ডা থাকে। এক্ষেত্রে টেবিল ফ্যান ব্যবহার করতে হবে।

এছাড়া ভেন্টিলেটর, ফ্যান, জানালা, ঘর নিয়মিত পরিষ্কার রাখা উচিত। আর নিজেকে শীতল ও হাইড্রেটেড রাখতে পরিমিত পানি পান ও ফলমূল খাওয়ারও বিকল্প নেই।


সর্বশেষ সংবাদ