কূটনীতিক হতে চাইলে ‘আইআর’ আপনার জন্য, পাঠদান ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে

লোগো
লোগো  © টিডিসি ফটো

আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থায় আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক, দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ও চুক্তি, বৈশ্বিক সমস্যার সমাধান, বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা—এই সব বিষয়ে দাপটের সঙ্গে প্রভাব বিস্তার করছে উচ্চশিক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আইআর। উল্লেখিত বিষয়ে জানতে আইআরের জ্ঞানের বিকল্প নেই। আইআরের ফুল মিনিং ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস।

কেন পড়বেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কে

সে বিষয়ে যাবার আগে আসুন নিজেকে প্রশ্ন করা যাক, কি চায় একজন মানুষ? সহজেই নিজের একটি ভাল অবস্থান তৈরি করে নিতে। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ, যশ-খ্যাতি আর বড় অঙ্কের বেতন। সর্বোপরি কাজের ভেতর দিয়ে দেশকে সেবা দিতে কে না চায়! আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে পড়াশুনা করলে এই সব সুযোগ ধরা দেবে সহজে।

একইসঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বা দেশের কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে সম্পৃক্ত হয়ে নিজেকে একজন দক্ষ কূটনীতিক হিসেবেও গড়ে তুলতে পারবেন।

দেশের ভেতর কোথায় পড়বেন

আমাদের দেশে এ বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ খুবই সীমিত। মাত্র ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। সেগুলো হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ_মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

আরও পড়ুন: সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা সমাজের ডাক্তার, চাকরির সুযোগও প্রশস্ত

এছাড়া দেশের বাইরে এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা আমেরিকা বা ব্রিটেনে, অস্ট্রেলিয়াতে বেশি সুযোগ রয়েছে। এর কারণ অস্ট্রেলিয়া প্রচুর স্কলারশিপ দিচ্ছে। এগুলোর বাইরে ভারত, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক , ইতালি, জার্মান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্কলারশিপ দিচ্ছে।

এসব স্কলারশিপে থাকছে অনার্স-মাস্টার্স এবং পিএইচডি করার সুযোগ। ইউরোপের যে কোন দেশে পড়তে খরচ হবে বছরে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত।

আইআরে কী কী পড়ানো হয়

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে যে বিষয়গুলো পড়ানো হয় তা হলো- ইন্ট্রোডাকশন টু ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন, ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড রিজিওনাল ইনস্টিটিউশন, ফরেন পলিসি অ্যানালাইসিস, বাংলাদেশ ইন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, আইডিওলজি ইন ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স রিফিউজি, মাইগ্র্যান্ট অ্যান্ড ডিসপ্লেসমেন্ট, স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ, থিওরিজ অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন, ইন্টারন্যাশনাল নেগোসিয়েশন অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাসি।

ইন্টারন্যাশনাল ল’, পলিটিক্স অব জেন্ডার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট স্টেট, সিভিল সোসাইটি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস, মাস কমিউনিকেশন, জিওগ্রাফি, রিসার্চ মেথোডোলজি, ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্যাল ইকোনমি অ্যান্ড ট্রেড রিজুম, ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি, কনফ্লিক্ট রেজুলেশন অ্যান্ড পিস স্টাডিজ, পলিটিক্স অব গ্লোবালাইজেশন, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট ইত্যাদি।

আইআরে পড়তে কী চাই

যে কোনো বিষয়ে পড়তে হলে আগে সে বিষয়ের প্রতি আগ্রহ থাকা চাই। এ বিষয়ে পড়তে হলেও প্রচণ্ড আগ্রহ থাকতে হবে। প্রচুর পড়াশোনার অভ্যাস থাকতে হবে। বেশিরভাগ সময় বই নিয়ে নাড়াচাড়া করা কিংবা বইয়ের সঙ্গে সময় কাটানোর মনমানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। দেশের সঙ্গে বিদেশের কূটনীতি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে। ইংরেজিতে দক্ষ হলে এ বিষয়ে পড়তে অনেক সুবিধা হবে।

চাকরি পাবেন যেখানে

এ বিষয় নিয়ে পড়াশোনা শেষে দেশ-বিদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন, মাইগ্রেশন, ডিসপ্লেসমেন্ট ও ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি করতে পারবেন। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন জাতিসংঘের পেশাদার কূটনীতিক ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে পারবেন। আর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষকতা করার সুযোগ তো রয়েছেই।

বর্তমানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক একটি যুগোপযোগী ও চাহিদাসম্পন্ন বিষয়। এ বিষয়ে পড়াশোনা করে একটি স্মার্ট ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংক এনজিও, ইন্সটিটিউশনেও উচ্চ বেতনে জব পাওয়া সুযোগ রয়েছে।

লেখক: শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, বশেমুরবিপ্রবি


সর্বশেষ সংবাদ