ফেনীতে প্রাথমিকে যোগ দেবেন ১২৪ সহকারী শিক্ষক
- ফেনী প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৫, ১১:২৪ AM , আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৫, ১১:২৪ AM

টানা ২৬ দিন আন্দোলন এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশের পর অবশেষে ফেনীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেন ১৩৭ জন প্রার্থী। তবে তাদের মধ্যে ১৩ জনের ইতোমধ্যে অন্যান্য স্থানে চাকরিতে যোগদান করায় বর্তমানে ১২৪ জন প্রার্থী এই পদে যোগদান করবেন বলে জানা গেছে।
সোমবার (৩ মার্চ) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ নিয়োগ কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু করেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের তৃতীয় ধাপে মোট ৬ হাজার ৫৩১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে ফেনী জেলার ১৩৭ জন রয়েছেন। ১৩৭ জনের মধ্যে ১৩ জনের ইতোমধ্যে অন্যান্য স্থানে চাকরিতে যোগদান করায় বর্তমানে ১২৪ জন প্রার্থী এই পদে যোগদান করবেন।
আরো পড়ুন: শিক্ষকদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন নিয়ে যা জানালেন মাউশি ডিজি
জানা যায়, ফেনীতে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া গত বছরের মার্চে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হয়। ওই বছর ২২ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলে প্রায় ৯০০ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। পরবর্তী সময়ে ১৪ মে থেকে ৮ জুন পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ফেনীতে ১৩৭ জন প্রার্থী সহকারী শিক্ষক পদে চূড়ান্তভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, নিয়োগপ্রাপ্ত ১২৪ জনের মধ্যে ফেনী সদরে ৭ জন, দাগনভূঞায় ২২ জন, সোনাগাজীতে ৪৫ জন, ছাগলনাইয়ায় ১৫ জন, ফুলগাজীতে ২০ জন এবং পরশুরামে ১৫ জন রয়েছেন।
সহকারী শিক্ষক পদে প্রথম স্থানে নিয়োগপ্রাপ্ত এনামুল হক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘নিয়োগের ফলাফল ৩১ অক্টোবর প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে তা বাতিল হয়ে যায়। এতে আমরা চরম দুশ্চিন্তা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাই। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে এটি পুনর্বহাল করায় আমরা খুবই আনন্দিত।’
আন্দোলনের ফেনী জেলার সমন্বয়ক রাবেয়া সুলতানা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘২৬ দিন টানা ঢাকায় আন্দোলনের পর অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে আমাদের নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য একটানা ২৬ দিন সংগ্রাম করতে হয়েছে এবং আজ তা সফল হয়েছে বলে জানান তিনি।’
এ বিষয়ে ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফিরোজ আহাম্মদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘২০২৪ সালের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগটি মামলাজনিত কারণে স্থগিত ছিল। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্তরা আগামী ১২ মার্চের মধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করবে।’
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি তিন ধাপে প্রকাশিত হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার পর তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়। ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই দুই বিভাগের ৬৫৩১ জনকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে সুপারিশ করে।
তবে অনুত্তীর্ণ কিছু প্রার্থীর করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত ৬ ফেব্রুয়ারি এই সুপারিশ বাতিল করেন। আদালতের আদেশের পর থেকে ভুক্তভোগী প্রার্থীরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। টানা ২৬ দিন ধরে চলা এ আন্দোলনের পর, অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশে সরকার তাদের নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছে।