সন্তানকে দিয়ে ক্লাস নিলেন প্রাথমিকের শিক্ষিকা, ফেসবুকে সমালোচনা

ক্লাস নিচ্ছেন শিশু সন্তান
ক্লাস নিচ্ছেন শিশু সন্তান  © ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

ভোলা জেলার চরফ্যাশনের ৩৯নং হাজারীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হাফছা খানম ওরফে প্রিয়া ইসলামের এক ভিডিও নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, তিনি তার তিন বছর বয়সী কন্যাকে দিয়ে শ্রেণিকক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে নিজের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে পোস্ট করেন। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘ম্যাডাম যখন দ্বিতীয় শ্রেণীর ইংরেজি ক্লাসে বাঘবাকুম পায়রা কবিতা শেখায়।’ মুহূর্তের মধ্যেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায় এবং অভিভাবক ও শিক্ষক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানিয়েছেন, এই শিক্ষিকা যদি প্রকৃত পড়াশোনা করে শিক্ষকতা পেশায় আসতেন, তাহলে শ্রেণিকক্ষে এমন কাজ করতেন না। তিনি শ্রেণিকক্ষটিকে ব্যক্তিগত বসতঘর মনে করেছেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, শিক্ষিকা হাফছা খানম শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, তার স্বামী চরফ্যাশন পৌর শ্রমিকলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম সবুজ টাকার বিনিময়ে অন্য ব্যক্তিকে দিয়ে তার লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মামুন বলেন, এমন কোনো কাজ কোনো শিক্ষক করতে পারেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

শিক্ষিকা হাফছা খানম জানিয়েছেন, দুষ্টামির ছলে ভিডিওটি ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করেছি। বিষয়টি এতদূর গড়াবে, তা জানা ছিল না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে আমি ভিডিওটি সরিয়ে ফেলেছি।

চরফ্যাশন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাশেম উদ্দিন বলেন, শিক্ষিকার এমন কর্মকান্ডের কথা শুনে আমি বিম্মিত হয়েছি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, যদি কোন শিক্ষক এমনটা করে থাকে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথি বলেছেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান জানান, কোনো শিক্ষক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে তাদের শিশু সন্তান নিয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই। তার শিশুকে দিয়ে পাঠদান করানোরও কোনো বৈধতা নেই।


সর্বশেষ সংবাদ